অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে ভাইরাল সেই ছাত্রলীগ নেতা এখন সরকারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
২০২২ সালের ২৪ মে দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চলাকালীন সময়ে রামদা হাতে মহড়া দিয়েছিলেন মো. ইয়াসির আরাফাত ওরফে ডিটু নামে ছাত্রলীগের এক নেতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন এই নেতা বর্তমানে সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি প্রতিষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিগত সময়ে বিরোধী দল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছিল এমন ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার ঘটনাটি ফেসবুকে শেয়ার করে শাস্তি দাবি জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে ভাইরাল ছাত্রলীগ নেতা
অন্যদিকে ছাত্রদল বলছে, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে এ ধরনের যত হামলা হয়েছে সবগুলো বিচাররের আওতায় আনার জন্য তারা কাজ করছে। ইতিমধ্যে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের একটি ঘটনায় ঢাবির সাবেক প্রক্টর ও ছাত্রলীগের জয়-লেখক-সঞ্জিত-সাদ্দামসহ ৬৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ওই বছরের ২৪ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের ঘটনাটি নিয়েও মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম।
তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ওইদিন ক্যাম্পাসে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে তারা এই হামলার শিকার হয়েছিল। তখন অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে ভাইরাল হয়েছিল ছাত্রলীগের এক নেতা। আজ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফেসবুকে লেখালেখি করতে দেখেছি।
আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা দমন-নিপীড়ন করে এখন পুরস্কৃত হয়েছে কেউ সরকারি চাকরি করছে, কেউবা আবার রাজনীতিতে বড় পদ পেয়েছে। আমরা যত হামলা হয়েছে সবগুলো বিচারের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। শুধু ছাত্রদল নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিটি ঘটনায়ও মামলা করা হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের ঘটনাটি নিয়েও মামলা হবে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে ঢাকার সাভারের অবস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আওতাধীন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছিলেন মো. ইয়াসির আরাফাত ওরফে ডিটু। এর আগে তিনি ২০১৫-১৬ সেশনের ঢাবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। পবর্তীতে তিনি ২০২০ সালে স্নাতক ও ২০২১ সালে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
ক্যাম্পাসে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল শাখা ছাত্রলীগের এই যুগ্ম সম্পাদক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমের অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারী ছিলেন।
জানতে চাইলে মো. ইয়াসির আরাফাত ওরফে ডিটু দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ঘটনার দিক হলের এক ছোট ভাই রামদাটি নিয়ে এসেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি হাতে নেওয়ার পর কেউ ছবি তুললে সেটি ভাইরাল হয়েছিল। তবে ছাত্রলীগের রাজনীতি করলেও আরও কোনো সংঘর্ষে জড়িত ছিলেন না বলে তিনি দাবি করেন।