আমাকে হলের ১১ তলা থেকে ফেলে হত্যার হুমকি দিয়েছিল: হাসনাত
নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের প্রথম রাজনৈতিক ভুক্তভোগী বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ’হলের ১১ তলা থেকে ফেলে হত্যার হুমকি দিয়েছিল আমাকে।’ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বিজয় ৭১' হলে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা উদযাপন’ উপলক্ষে এ আয়োজ করা হয়।
ছাত্রলীগের নানা অপকর্মের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'সে সময়কার ছাত্রলীগের জাঁদরেল নেতা মুন্নার চোখ পড়ে আমার সিটের দিকে। তারা আমাকে আমার সিট থেকে চলে যেতে বলে। কিন্তু আমি তো প্রশাসনিকভাবে সিট পেয়েছি, আমি যেতে চাইনি। শেষ পর্যন্ত থাকতে পারলাম না, কিন্তু লিগ্যাল সিটের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গেলাম। প্রভোস্ট স্যারের রুমের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতাম, কিন্তু কোনো সমাধান পেতাম না।'
জানা গেছে, মুন্না ছিলেন তৎকালীন সভাপতি ফকির রাসেলের সমর্থক। হত্যার হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'মুন্না ও আরও কয়েকজন আমাকে নিয়ে যমুনা ব্লকের ১১ তলায় নিয়ে যায় নিয়ে গিয়ে বলে- নিচে দেখ, যদি আরেকবার তাকাস তাহলে এখান থেকে ফালাইয়া দিমু।'
হাসনাত বলেন, 'তারপরও দমে যাইনি, আমার কোনো বড় ভাই নেই, কোনো পলিটিক্যাল ব্যাকআপ নাই। তবুও আমি প্রভোস্ট স্যারের কাছে যাই। তিনি আমাকে ১৫ দিন সময় দেন। এ ১৫ দিন আমি কখনো জসীমউদ্দীন হলে, কখনো সূর্যসেন হলে, কখনো মসজিদে থেকেছি। তারপর আমার নামে কারফিউ জারি করে দেয়। আমাকে হলের আশেপাশে যদি কোথাও দেখা যায় তাহলে যেন পিটিয়ে বের করে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘এরপর থেকে অন্তত চার মাস লড়েছি, প্রভোস্ট থেকে ভিসি অবধি গিয়েছি, কোথাও সমাধান পায়নি। একপর্যায়ে চাপের মুখে আমাকে সে সময়ের ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ এবং জাকির পদ্মা ৫০০২ এ থাকতে দেয়। তবু পাইনি লিগ্যাল সিট। আমিই ছিলাম প্রথম পলিটিকাল ভিকটিম।'
প্রভোস্ট এবং হাউজ টিউটরদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা একটা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলবেন, দেখবেন তারা কেউই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, বিসিএস ক্যাডার ছাড়া অন্য কিছু হতে চায় না। কিন্তু এই ছেলেটার সাথে আপনি ছয় মাস পর কথা বলতে গেলে আপনি হতাশাজনক টোন পাবেন। তাদের মানসিক কাউন্সিলিং দরকার। তাদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।'
আরও পড়ুন: সাইবার মামলায় গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ তথ্য উপদেষ্টার
হাসনাত বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একান্তর হল থেকে যত নোংরা কালচার রয়েছে, সেলফি কালচার, বড় ভাই কালচার, গণরুম কালচার, গেস্ট রুম কালচার, সব কালচার স্থায়ী কবরস্থ হোক।'