৩১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪২

কোটা আন্দোলনে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অ্যামনেস্টির চিঠি

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড  © সংগৃহীত

দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি চেয়ে এবং এই সংক্রান্ত কয়েকটি দাবির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এই চিঠি অ্যামনেস্টির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে দুই শতাধিক নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের যথাযথ শাস্তির আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে কারফিউের বন্ধ করে সবার জন্য সামাজিক মাধ্যম খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতি উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া চিঠিতে মোট ছয়টি দাবি করেছে সংস্থাটি। এগুলো হলো- অবিলম্বে সম্পূর্ণরূপে কারফিউ তুলে নিন। সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোতে মানুষেরে সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস পুনরুদ্ধার করুন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে বিক্ষোভ দমনে কারফিউতে দেখা মাত্রই গুলি করার নির্দেশ ও ইন্টারনেট বন্ধ করা হবে না বা অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো লঙ্ঘন করা হবে না—এমন নিশ্চয়তা প্রদান। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার প্রয়োগ করার জন্য যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে ও নিঃশর্তে মুক্তি দিন।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সংযম অনুশীলন করার নির্দেশ দিন। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার না করতে এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করুন। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশিং অনুশীলনের সংশোধন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে মানবাধিকারের মানদণ্ডে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সুরক্ষা ও সুবিধা নিশ্চিত করা।

বিক্ষোভ দমনের সময় নিহত ও আহতদের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ, কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করতে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। বল প্রয়োগের বেআইনি ব্যবহারের জন্য যারা দায়ী তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। বেআইনি পুলিশি সহিংসতার শিকার এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের, যারা আহত হয়েছেন এবং যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং এই ধরনের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার গ্যারান্টি প্রদান করুন।

বাংলাদেশের সংবিধান ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করুন। এ ক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারার মতো যেসব আইন বাধা রয়েছে সেগুলা দূর করুন।