সমন্বয়কদের জোর করে বিবৃতি দেয়া হয়নি, সাক্ষাতের পর পরিবার
ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের বিবৃতি জোর করে নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করে তারা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘ছয় সমন্বয়ক স্বেচ্ছায় বিবৃতি দিয়েছেন। জোর করে বিবৃতি নেয়া হয়নি।’
হাসনাত আবদুল্লার ভাই বলেন, হাসনাত বলেছে তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়নি। তাঁদের কোনো সমস্যা করে নাই, ভালো আছে।
নুসরাত তাবাসসুমের মা বলেছেন, ‘এখানে এসে স্বস্তি পেয়েছি। আমার মেয়ে যথেষ্ট ভালো আছে। আপ্যায়ন পেয়েছে। তাঁর সঙ্গে আমিও আপ্যায়ন পেয়েছি।’ নাহিদ ইসলামের মাও বলেন, নাহিদ ভালো আছে। একই কথা বলেছেন হেফাজতে থাকা আরও চার সমন্বয়কের স্বজনেরাও।
রোববার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজত থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ছয় সমন্বয়ক। এ ঘোষণা দিয়ে তারা লিখিত বার্তাও দেন।
তারা বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা এরইমধ্যে সরকার পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’
এর আগে, রোববার বিকেলে ডিবি হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের দেখা করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। বিকেলে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্যদের স্বজনরা মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ের পাশের রাস্তায় জড়ো হন। বেশ কিছুক্ষণ অবস্থানের পরও ডিবি কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তারা কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবকরা জানান, ডিবি হেফাজতে সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব সমন্বয়কারীর মুক্তিরও দাবি জানান তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদকে প্রথমবার ডিবি হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছিল তার পরিবার।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছেন, নিরাপত্তা দিতেই নাহিদ, সারজিস, আসিফ ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কোটা আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়কারীকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সহিংসতার পেছনের কারিগরদের খুঁজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গুজবে কান না দিয়ে পরিবারকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন তিনি।
গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) নিরাপত্তার কথা বলে আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। পরে শনিবার (২৭ জুলাই) সারজিস, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকেও ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়।