বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার, জানালেন ডিবি হেফাজতে থাকা সমন্বয়করা
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজত থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক। আজ রবিবার (২৮ জুলাই) রাতে সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা লিখিত বার্তায় এ ঘোষণা দেন। তবে জিম্মি করে এই বিবৃতি আদায় করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক।
সমন্বয়করা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাই। আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা ইতোমধ্যে সরকার পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি, বলেন সমন্বয়করা।
লিখিত বার্তায় স্বাক্ষর করেন আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম।
তবে জিম্মি করে এই বিবৃতি আদায় করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক। তারা হলেন সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, আব্দুল হান্নান মাসুদ, মো. মাহিন সরকার, সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশিদ ও আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন। রাতে তারা আলাদা আলাদা বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে আব্দুল কাদের বলেন, সমন্বয়কদের জিম্মি করে নির্যাতনের মুখে যে স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হইছে, সেটা কখনোই জাতির নিকট গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আটককৃত সমন্বয়করা ভয়ভীতির মুখে গোয়েন্দা সংস্থার লিখে দেওয়া যে বক্তব্য কেবল রিডিং পড়ে গেছে, আমরা সেই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি এবং একইসাথে জোরপূর্বক বক্তব্য আদায় করার মতো সরকারের এমন জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, পূর্বে উত্থাপিত ছাত্র হত্যার দায়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা প্রার্থনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। দেশবাসীর প্রতি আহবান, আপনারা কোনোপ্রকার বিভ্রান্ত হবেন না। যে কোটার জন্য সরকার এতোগুলা মানুষকে হত্যা করেছিল, সেই হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
আরেক বিবৃতিতে আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন বলেন, জিম্মি করে, অস্ত্রের মুখে, জোর করিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের বক্তব্য দেওয়ায়ে, আন্দোলন থামিয়ে রাখা যাবে না। এখনই আমার ভাই-বোনদেরকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।