‘কোটার স্থায়ী সমাধান না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চলবে’
সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে আপিল বিভাগের রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন কোটা সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, আদালতের প্রতি সম্মান আছে, তবে কমিশন গঠন করে কোটা পদ্ধতির সংস্কার ও স্থায়ী সমাধান না হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বুধবার (১০ জুলাই) হাইকোর্টের রায়ের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল বলেন, আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। কোটা নিয়ে বারবার টালবাহানা দেখতে চাই না। সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এর আগে, এদিন সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ৪ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে শুনানি করা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, প্রধান বিচারপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নির্দেশনা দিয়েছেন যেন তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেন। একইসঙ্গে তিনি ক্যাম্পাসগুলোতে উপাচার্যদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে অনুরোধ করেছেন।
এর আগে সকালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে দুই আবেদনের শুনানির জন্য বেলা সাড়ে ১১টা নির্ধারণ করা হয়। এদিন রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ সময় নির্ধারণ করেন।
শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। আমাদের রাষ্ট্রপক্ষেরও একটি আবেদন আবেদন রয়েছে। দুটি আবেদন একসঙ্গে সাড়ে ১১টায় শুনানি হলে ভালো হয়। তখন আপিল বিভাগ শুনানির জন্য বেলা সাড়ে ১১টা নির্ধারণ করেন।
মঙ্গলবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন।
দুই শিক্ষার্থী হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া ও উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান।
পরে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতির আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। শুধু এ মামলার শুনানির দিন ধার্যের জন্য মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতির আদালত বসেছিলেন।