ভিন্ন গ্রুপের রাজনীতি করায় ছাত্রলীগ নেতাকে হল ছাড়ার নির্দেশ, বিছানাপত্র ফেলে দিল কর্মীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  © টিডিসি ফটো

একই সংগঠনের ভিন্ন নেতার গ্রুপের রাজনীতির সমর্থন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের হল শাখার সহ-সম্পাদক আখিরুজ্জামানকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে হল থেকে তার বিছানাপত্র ফেলে দিয়েছে নিজ দলেরই কর্মীরা।

বুধবার (২ জুলাই) রাতে হলের ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাব্বি আহমেদের কয়েকজন অনুসারী তাকে হল থেকে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানান এই ভুক্তভোগী নেতা। 

রাব্বি আহমেদ জহুরুল হক হলের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। আখিরুজ্জামান শুরুতে রাব্বি আহমেদের অধীনে রাজনীতি করতেন। পরে এ গ্রুপ থেকে সরে অন্য গ্রুপে চলে যান। 

বুধবার ভুক্তভোগী আখিরুজ্জামান জানান, রাত ১১টার সময় হল শাখা ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা উপ-সম্পাদকের শেখ মুততারিন অথৈ, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক সজল আহমেদ, রায়হানসহ আমার ৫-৬ জন বন্ধু চলে আসে। তারা আমাকে ওয়ার্নিং দেয় এবং রাব্বি ভাইয়ের নির্দেশে আমাকে হল থেকে বের হতে হবে। 

তিনি বলেন, আজ সারাদিন আমি হলে ছিলাম না। প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান, প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম স্যারের কাছে গিয়েছি। কোনো সদুপায় পাইনি। আজ (৩ জুলাই) রাতে হলে এসে দেখি অথৈ, সজলের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন জুনিয়র নিয়ে তারা আমার রুমের সামনে উপস্থিত। আমি সাথে সাথে রহিম স্যারের কাছে যাই। স্যারের মিটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে আসতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, পরে আমি রুমে এসে দেখি আমার ল্যাপটপ, নগদ টাকা-যা ছিল, আমি কিছুই পাচ্ছি না। আমার বই-খাতা, বেড সব এলোমেলো করে রাখা হয়েছে। 

সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের টিনশেডের ১৯ নম্বর কক্ষের দুটি ছবি এই প্রতিবেদকের কাছে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, অনেকগুলো বই একদিকে উলটপালট করে জড়ো করা হয়েছে। একটি বেড মুচড়ে ফ্লোরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। 

জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ১৫-২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী এসে প্রথমে ফোনে কল দিয়ে আখিরকে না পেয়ে তার রুমের বইপত্র সব ওলট-পালট করে ফেলে দেয়। তার বিছানাপত্র রুমের বাহিরে ফেলে দেয়৷

তবে এটি আখিরুজ্জামানকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন রাব্বি আহমেদ। তিনি বলেন, তার বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সে অন্য গ্রুপে চলে যাওয়ায় আমি তাকে আমাদের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বের করে দেই। এ বিষয়ে তার বন্ধুরা তার কাছে জানতে গিয়েছিল। তা নিয়ে কোনো ঝামেলা হতে পারে। 

তিনি বলেন, আমি এখনও তার কক্ষে আছি। তার রুম এলোমেলো হওয়া বা বেড ফেলে দেওয়ার মতো কিছু দেখছি না। সে মধুসহ (মধুর ক্যান্টিন) বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে। তাই তার রুম একটু অগোছালো থাকে। 

এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমি একজন আবাসিক শিক্ষক পাঠিয়েছি তাকে পুনরায় রুমে তুলে দিতে। এটা সমাধান হবে বলে তিনি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ