০৬ মে ২০২৪, ১৮:৪৩

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ঢাবিতে ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশ

  © টিডিসি ফটো

যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ সমাবেশ। সোমবার (৬ মে) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রায় দশ থেকে পনেরো হাজার শিক্ষার্থীর সমাগমে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

পদযাত্রাটি মধুর ক্যান্টিন থেকে ফুলার রোড, শহীদ মিনার হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে ছাত্র সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সংহতি কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। 

শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এই বিশাল সমাবেশের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান এবং ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগের এরকম মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ফিলিস্তিনির পক্ষে অবস্থান নিতে আমরা সমাবেশে এসেছি। এই সমাবেশটা শুধু রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নয়, আমাদেরকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েও দেখতে হবে। তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বলে তারা জানান। 

প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত কুয়েত মৈত্রী হলের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশের কোথাও, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এতো শিক্ষার্থী সমাগম হয় নি, যতটা আজ হয়েছে। এটিই মনে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ সমাবেশ। 

প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ঠিক এই মুহূর্তে আমরা যতক্ষণ ধরে প্রতিবাদী আন্দোলন চালাচ্ছি, আমার ঠিক জানা নাই ততক্ষণে ফিলিস্তিনিতে কতজন শিশু মারা গিয়েছে, কতজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, হাসপাতালের বেডে ঠিক কতজন বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছে। আজকে আমাদের শিশুরা যখন দুধে ভাতে থাকে তখন ফিলিস্তিনি শিশুরা অন্ন আহার পাচ্ছে না। সেখানে সহায়তা পাঠানোর পরেও ইজরায়েলি বাহিনী তাদের কাছে পৌঁছাতে দেয় নি। আমরা কখনো যুদ্ধের নীতিতে দেখিনি হাসপাতালে বোমা হামলা হয়েছে, সেটিও ঘটেছে ফিলিস্তিনিতে। শিক্ষার্থীরা সত্য ও ন্যায়ের কথা বলবে, তাদের উপর যারা হামলা করবে, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করবে। যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিন স্বাধীন না হবে ততদিন পর্যন্ত বাংলার ছাত্র সমাজ আন্দোলন করে যাবে। 

কেন্দ্র ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের উপর যে আগ্রাসী আক্রমণ চলছে, যে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে তার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যে আন্দোলন সে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছি। বিশ্বের নির্যাতিত, নিষ্পেষিত এবং শোষিত মানুষের পক্ষে সবসময় ছাত্রলীগ লড়বে। আমরা একসাথে বাঁচবো, একসাথে লড়বো, একসাথে বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলবো। আমরা একসাথে শান্তিপূর্ণ মানবিক বিশ্ব গড়বো। আমরা সবসময় ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি। 

সভাপতির বক্তব্যে সাদ্দাম হোসেন বলেন, গোটা পৃথিবীতে ফিলিস্তিনের পক্ষে একটি ছাত্র আন্দোলন চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচি শুধু ছাত্রলীগের কর্মসূচি নয়, এটি দেশের সকল শিক্ষার্থীর কর্মসূচি, বিশ্বের সকল মুক্তিকামী মানুষের কর্মসূচি। আমাদের এই ছাত্র আন্দোলন আর দেশীয় গণ্ডির ভেতর সীমাবদ্ধ নেই। সীমান্ত বেরিকেট, ভাষার ব্যবধান সবকিছু মুছে দিয়ে একাকার হয়ে গেছে যুদ্ধ-মুক্ত, ন্যায় ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। আমাদের এই ছাত্র আন্দোলনে সমবেত হয়েছেন নির্যাতিত নিষ্পেষিত ফিলিস্তিনের বন্ধুরাও। আমাদের পূর্বপুরুষরা নিজেদের দেশের মুক্তির জন্য বীরত্বের সঙ্গে যেভাবে লড়াই করেছে ঠিক তেমনি আমরাও ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের পাশে দাঁড়াব।

প্রতিবাদ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, মহানগর উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।