দীর্ঘ শিক্ষাজীবন নিয়ে সমালোচনার যে জবাব সাদ্দামের
ছাত্ররাজনীতিতে বর্তামানে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাক্তি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। বাকপটু এবং সুবক্তা হিসেবে খ্যাত সাদ্দাম ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর হতে এই সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১১-২০১২ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন তিনি।
আইন বিভাগের চার বছরের এই কোর্স শেষ করতে তিনি ৮ বছর সময় নেন। গ্র্যাজুয়েশনের এই লম্বা সময় লাগার কারণেই বিভিন্ন মহলে তিনি নানান আলোচনা সমালোচনার স্বীকার হয়েছেন। সাদ্দাম অনার্স প্রথম বর্ষ পার হতে তিন বছর সময় নেন। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি অকৃতকার্য হন। চতুর্থবারের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে তিনি প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৬ সালের দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষাও পাস করতে পারেননি সাদ্দাম হোসেন। ২০১৭ সালের ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০১৮ সালে তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করেন। সেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়। সেই পরীক্ষায়ও অকৃতকার্য হন সাদ্দাম। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বর্ষের ব্যাচেলর অব ‘ল’ (এলএলবি) এর ফলাফলে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন।
স্নাতক সম্পন্ন করতে এত সময় লাগার কারণ হিসেবে তিনি জানান, আমার একাডেমিক ক্যারিয়ারটা লম্বা হয়েছে, আমার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হয়েছে এবং রেজাল্ট খারাপ করেছি অনেক সময়। অ্যাটেনডেন্সের সমস্যাটা সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল। অ্যাটেনডেন্সের নির্ধারিত কোটা পূরণ না হলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায় না। তাই আমি দুইবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি। এসব বিষয় নিয়ে এর আগেও ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে এবং আমি প্রত্যেকটি আলোচনা সমালোচনার কিন্তু জবাব দিয়েছে এবং আমি এসব আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অনেকে এটা বলার চেষ্টা করে যে, আমার রাজনীতি ক্যারিয়ার নিয়ে কথা না বলে আমার একাডেমিক ক্যারিয়ার নিয়ে কেন কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি সেই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হই না। আমি মনে করি, যারা পাবলিক ওয়ার্ক করে, যারা ছাত্ররাজনীতি করে, তাদের সমস্ত কিছু রাডারে আসা উচিত। তারা কী করছে শুদ্ধ না অশুদ্ধ, ভালো না মন্দ তা ছাত্ররা বিচার করবে।
সাদ্দাম বলেন, একবার আমার রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পর যখন ব্যাপক আকারে আলোচনা হলো, তখন কিন্তু আমি বলেছি যে, এটা যৌক্তিক সমালোচনা। এ সমালোচনাকে আমার গ্রহণ করতে হবে এবং পাস করে বা ভালো ফলাফল করে সেটি সমাপ্ত করতে হবে। যখন সমালোচনা হচ্ছিল তখন আমার মনে আছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা আমাকে মেসেজ দিয়েছিল, চিঠি দিয়েছিল যে পাস করলে চকলেট দেবে, ফুল দেবে এবং এফ রহমান হলে আমি যে রুমে থাকতাম সে হলে অনেকে ফুল, চিঠি, চকলেট পাঠিয়েছে। সে বছরে পরে কিন্তু আমি ভালো ফলাফল করে আমার স্নাতক সম্পন্ন করেছি।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের একটি আদেশে বলা আছে, আট বছরের বেশি কোনো শিক্ষার্থী ঢাবির নিয়মিত ছাত্র হিসেবে অধ্যায়ন করতে পারবে না। এই আট বছরের ভেতর ছয় বছরে স্নাতক ও দুই বছরের মধ্যে স্নাতকোত্তর করতে হবে। কিন্তু সাদ্দাম হোসেনের শুধু স্নাতক শেষ করতে লেগেছে ৮ বছর। মূলত, অনুষদের ডিনের বিশেষ ব্যবস্থায় সাদ্দাম হোসেন অতিরিক্ত সময় পান স্নাতক শেষ করার জন্য।