সাংবাদিকের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি ছাত্রলীগ নেতার
সিলেটে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবককে ‘তুলে’ নেওয়ার সময় বাধা দেওয়ায় এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছেন পিয়াং সোম নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। এসময় প্রকাশ্যে ওই সাংবাদিকের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার ফটোসাংবাদিকের নাম রেজা রুবেল। তিনি নিবন্ধিত স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটির ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা পিয়াং সোম মহানগর ছাত্রলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের অনুসারী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন অনুসারী নিয়ে নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বিপরীতে এক যুবককে মারধর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন পিয়াং সোম। পেশাগত দায়িত্ব পালনে ওই সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলে করে নগর ভবনে যাচ্ছিলেন রেজা রুবেল।
আরও পড়ুন: ভাড়া বেশি চাওয়ায় বাস আটকে চাঁদা আদায় জাবি ছাত্রলীগের
পথিমধ্যে ঘটনাটি দেখে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলেন। এমন সময় ছাত্রলীগ নেতারা তাকে ধাওয়া করেন। নিরাপত্তা পেতে তিনি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেন। তখন ছাত্রলীগ নেতারা তার ওপর চড়াও হন।
পিয়াং সোম নিজেকে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে বলেন, কার ক্ষমতা আছে কিছু করার। আমি কুট্টি সিলেটি। এ সময় অকথ্য ভাষায় সাংবাদিক সমাজ তুলে গালিগালাজ করে সাংবাদিক রেজা রুবেলের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেন। পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ঘটনাটি ঘটলেও কোনো পুলিশ সদস্য তাদের নিবৃত্ত করতে এগিয়ে আসেননি।
ফটোসাংবাদিক রেজা রুবেল বলেন, পিয়াং সোম নিজেকে মহানগর ছাত্রলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক সমাজ তুলে গালিগালাজ করেন এবং আমার হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। পুলিশ ফাঁড়ির ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজেও বিষয়টি পরিষ্কার বুঝা যাবে। বর্তমানে আমি প্রাণ ভয়ে আছি। এজন্য আমি আইনের আশ্রয় নেব।
তবে হামলা ও হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা পিয়াং সোম বলেন, এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। আমাদের সিনিয়ররা আছেন। রাত ১০টার পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানানো হবে।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ বলেন, ছাত্রলীগ কখনো সন্ত্রাসী কাজকে প্রশ্রয় দেয় না। কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন তবে এর দায় ছাত্রলীগ নেবে না। এর দায়ভার তাকেই নিতে হবে।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানাধীন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) কল্লোল গোস্বামী বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
এরআগেও গত বছরের ১৩ নভেম্বর সিলেট সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদীর বাসায় হামলা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন পিয়াং সোমসহ তার অনুসারীরা। পরে সিসিকের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর ও জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়।