১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫৬

অনশন অব্যাহত জাবি ছাত্রলীগ নেতার, যোগ দিলেন আরও একজন

অনশন অব্যাহত জাবি ছাত্রলীগ নেতার, যোগ দিলেন আরও একজন  © টিডিসি ফটো

তিন দফা দাবি জানিয়ে দ্বিতীয় দিনেও অনশন অব্যাহত রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। এ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংগঠনটির উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলামও তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। 

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তাদের এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন এনামুল হক এনাম। 

অনশনরত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম এবং বাংলা বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

তাদের দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং আট দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।

অনশনের বিষয়ে এনামুল হক এনাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ফেলার পর নয়দিন পার হয়েছে। তবে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে এখনো প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অনেক চাপাচাপির পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যেখানে ব্যঙ্গচিত্র আঁকার পর একটি সংগঠন অহংকারবোধ থেকে বিবৃতি দিয়েছে। আবার সেটা তাদের অফিসিয়াল পেজ থেকে প্রচারও করেছে। তাহলে তদন্ত কমিটি কীসের জন্য! অপরাধীদের ছাড় দেওয়ার জন্য নাটক করা হচ্ছে।’

রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছবি আঁকার জন্য অনেক জায়গা আছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি কেন টার্গেট করা হলো? নতুন ব্যঙ্গচিত্র দেখলেই বোঝা যাবে, এটা যৌক্তিক কোন চিত্র নয়। এটা যারা করেছে তারাই মূলত জামাত-শিবিরের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে।’   

অনশন ও গ্রাফিতি মুছে ফেলার বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস যারা করেছে তাদেরকে আমরা বলতে চাই, এই ধরনের রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি আমরা কখনোই বিশ্বাস করি না। আমরা শান্তি প্রিয় রাজনীতি করি। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করবো।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি প্রতিকৃতি আঁকা ছিলো। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রাফিতিটি মুছে দেওয়া হয়। এখন সেখানে আবারো বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে।

এ ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শামীম আহমেদ ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দীন। এছাড়া কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-২) এ বি এম আজিজুর রহমানকে সদস্য-সচিব করা হয়েছে।