সকলকে নিয়ে ডাকসু নির্বাচন, লক্ষ্য মার্চ ২০১৯
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০৯ PM , আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০৯ PM
আগামী বছরের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রাথমিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণশেষে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সকল সংগঠন নিয়েই নির্বাচনী ভোটের আয়োজন করা হবে।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সাথে আলোচনাশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান এমন তথ্য জানান।
সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, বামসংগঠনগুলোসহ মোট ১৩টি ছাত্র সংগঠন অংশগ্রহণ করে।
আলোচনা শেষে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ডাকসু সংক্রান্ত বিধিবিধান ও নিয়মকানুন মেনে নির্বাচন হবে। যদি এর কোন নিয়ম কানুন পরিবর্তন করারও দরকার হয় তবে সে ব্যাপারেও আমরা পদক্ষেপ নেব।
ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান সম্পর্কে ঢাবি ভিসি বলেন, ক্যাম্পাস এবং হলগুলোতে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার প্রাধ্যক্ষরা তা করবেন। মধুর ক্যান্টিন কেন্দ্রিক যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি সেটা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো তাদের রাজনৈতিক চর্চা করার জন্য যা যা করা দরকার তা করবে এতে কারো জন্য কোনো বাধা নেই।
কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের জন্য অনেক কাজ। এটা আমাদের প্রাথমিক প্রদক্ষেপ। প্রয়োজনে এরকম আরও বৈঠক হতে পারে। তবে আমাদের পরিবেশ সংসদ, শৃংখলা ও প্রভোস্ট কমিটি আমাদেরকে একটা সম্ভাব্য সময় দিয়েছে । সেটা হলো আমাদের লক্ষ্য আগামী বছরের মার্চ মাসে নির্বাচন দেয়ার। আমরা সে সময় থেকে এখনও সরে আসিনি। ইতোমধ্যেই আমাদের ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ আমাদের হল প্রাধ্যক্ষরা শুরু করে দিয়েছেন। আশা করি অক্টোবরের মধ্যেই ভোটার তালিকার একটা খসড়া হালনাগাদ আমরা পেয়ে যাব।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জানান, একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের সাথে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। একটি যৌক্তিক ও উপযুক্ত সময়ে নির্বাচন দেয়ার ব্যপারে তারা একমত হয়েছে। আমরা সকল ছাত্রসংগঠনের মতামত শুনেছি ৷ তাদের মতামত নোট করে নিয়েছি৷ সে অনুযায়ীই ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলোচনা শেষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা সকল ছাত্রসংগঠন এ বিষয়ে একমত হয়েছি যে ছাত্রদের অধিকার আদায়ে অবশ্যই ডাকসু নির্বাচন হতে হবে। আমরা চাই ডাকসু নির্বাচন হোক। রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে আমাদের কোনো আপত্তি নেই৷ ছাত্রদল পেট্রল বোমা নিয়ে না ঘুরলে তাদের সহাবস্থানের পক্ষে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা দেইনি। আমরা একটি যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন চাচ্ছি।
বৈঠকশেষে ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ডাকসু নির্বাচনের আগে আমরা রাজনৈতিক সহাবস্থান চাই৷ বিভিন্ন হলে অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতা কর্মীদের রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। মধুর ক্যান্টিনে সকল ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কেবল ডাকসু নির্বাচন দেয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ডাকসু নির্বাচন অতিদ্রুত হওয়া প্রয়োজন ৷ কেননা তা না হলে অতীতের মতো জাতীয় নির্বাচনের ইস্যু কাজে লাগিয়ে নির্বাচন আটকানো হবে। এ ছাড়াও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও প্রত্যেকটা হলে রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে মত দিয়েছি৷
ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এটা একটা বড় ইস্যু। নির্বাচনের আগে বা মাঝখানে হলে আমার মনে হয়না ভালো হবে৷ আমার মনে হয় নির্বাচনের পরে যত দ্রুত সম্ভব ডাকসুর ভোট করা যায়। ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে ঢাবি ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করবে। তিনি আরো বলেন, আমি প্রতিবাদ জানাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সভায় জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা আলোচনা সভায় এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছি। ইতিহাস বিকৃতি যারা করে, তারা মস্তিষ্ক বিকৃতদের বাইরে নয়।