হামলা-মামলা-গ্রেপ্তারও পিছু হটব না: ঢাবি ছাত্রদল
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি ও নির্বাচনী তফসিল বাতিল এবং গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। এর সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশে কর্মসূচি পালন করছে দলটির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ছাত্রদলের ৫ জন নেতাকর্মী মারধরের শিকার হয়েছেন। আর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ৪ জনকে। যদিও সংগঠনটি বলছে, হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার করেও তাদের আন্দোলন দমানো যাবে না।
জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর বিএনপি হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করে। এরপর কয়েকদফা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ঢাবি শাখা ছাত্রদলের চারজন নেতা মারধর ও গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাছাড়া আড্ডা দিতে এসে টিএসসিতে মারধরের শিকার হয়েছেন রাজধানীর দারুসসালাম থানা ছাত্রদলের এক নেতা।
গ্রেপ্তার হওয়া ৪ ছাত্রদল নেতা
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক ফারহান আরিফুর রহমান, ঢাবি ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক এবং শহীদুল্লাহ্ হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশুক, ঢাবি ছাত্রদলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং অমর একুশে হল ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম খান, মাস্টার দ্যা সূর্যসেন হল ছাত্রদল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক তানভীর হাসান ।
ছাত্রদলের অভিযোগ, গত ৭ নভেম্বর ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক ফারহান আরিফুর রহমানকে কার্জন হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে হলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে প্রক্টরের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে। যদিও ছাত্রলীগ বলছে এটা সাধারণ শিক্ষার্থীরা করছে।
গত ১৪ নভেম্বর কার্জন হল ও আশপাশের এলাকায় পোস্টার ও তালা দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশু এবং ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও অমর একুশে হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম খান। পরে তাদের পুলিশে দেয়া হয়।
গত ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কর্মসূচি শেষে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা মারধরে করে পুলিশের হাতে তুলে দেন মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক মো. তানভীর হাসানকে।
এদিকে, গত ৯ নভেম্বর টিএসসিতে আড্ডা দিতে এসে ছাত্রলীগের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন রাজধানীর দারুসসালাম থানা ছাত্রদলের ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক আহ্বায়ক সদস্য ইমরান হাসান জয়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের হামলাকে বাধা না দিয়ে উল্টো ছাত্রলীগের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করিয়ে দেয়। প্রক্টর স্যারকে বলেছি আমরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিন্তু ছাত্রলীগ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হামলা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশ ডেকে উল্টো আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। আমরা সরকারকে বলতে চাই ছাত্রদলের সর্বশেষ কর্মীও এক দফার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।
ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অবরোধের সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকগুলোতে তালা দেওয়ার জন্য ১০টি টিম ভাগ করে দেওয়া হলে মিশুক এবং জসিমকে ছাত্রলীগ কার্জন হল থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে প্রক্টরের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে। অপরাধে প্ররোচনা দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও এবং তফসিল ঘোষণার পরে ঢাবি ছাত্রদলের কর্মসূচি কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর পার্টির যে ঘোষিত হরতাল এবং অবরোধ কর্মসূচি তা পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। বিএনপি এখনও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও এর বাহিরে নয়। তবে এই সরকার যদি এই প্রহসনের তফসিলের মাধ্যমে আর একটা প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দিবে। আমরা প্রস্তুত আছি।