ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গেস্ট রুম-প্রোগ্রাম না করায় নির্যাতন: রাজু ভাস্কর্যে অনশনে নবীন ছাত্র
অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২৭ PM , আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১০ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ছাত্রলীগের নিয়মিত গেস্ট রুম ও প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করায় নবীন এক শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন ওই শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনশনে ছিলেন তিনি। পরে হল প্রশাসন বিচারের আশ্বাস দিলে তিনি অনশন ভাঙেন।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মোহাম্মদ রিফাত হাওলাদার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন এই শিক্ষার্থী থাকতেন মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে। তিনি হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ আমজাদের অনুসারী ছিলেন। মাসুদ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্তর গ্রুপের এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের রাজনীতি করেন।
হলে উঠার পর ছাত্রলীগের সিনিয়ররা প্রোগ্রামে না গেলে গেস্ট রুমে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে তার উপর নির্যাতন চালাত, করত নানাভাবে হেনস্তা। সেজন্য তিনি একাই রাজু ভাস্কর্যের দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান ওই শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রিফাত হাওলাদার বলেন, হলের সিনিয়ররা গেস্টরুমে শারীরিক ও মানসিকভাবে আমাদের উপর নির্যাতন চালায়। নানাভাবে হেনস্তা করে। হলে একটা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তারা। এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে এভাবেই চলতে থাকবে। সেজন্য আমি এখানে অনশন কর্মসূচি পালন করেছি।
তবে হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, হলের কিছু নিয়মকানুন আছে, যেগুলো সবাই মেনে চলে। কিন্তু রিফাত হাওলাদার এসব কোনো আদেশ মেনে চলেন না, সিনিয়রদের সাথেও বেয়াদবি করে। পরে আজ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে গিয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র ফেডারেশনের সাথে হাত মিলিয়ে রাজু ভাস্কর্যে অনশন করেন।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ আমজাদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রত্যেক হলে কিছু নিয়ম কানুন আছে যেগুলো শিক্ষার্থীরা মেনে চলে। রিফাত হাওলাদার হলের নিয়ম কানুন মেনে চলতে চায় না। তাই হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেল্লাল হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে আগে আমাকে বিষয়টি জানানোর দরকার ছিল। এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতও হতে পারে। যেহেতু সে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সেহেতু হলে কোনো সিট পাওয়ার কথা নয়। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রশাসনের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থী হলে সিট পাবেন কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানি না।