ঢাবির ফটকে ফটকে ছাত্রদলের তালা
একটি রঙিন পোস্টার তাতে লেখা ‘দেশ বাঁচানোর অবরোধ সফল হোক’। পাশেই ঝুলছে একটি তালা। এভাবেই বিএনপি ঘোষিত অবরোধের সমর্থনে আজ রোববার (৫ নভেম্বর) ভোররাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭টি ফটকে তালা দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।
সরেজমিনে দেখা যায় কার্জন গেট, পুষ্টি ইনস্টিটিউট, কলাভবন মসজিদ গেট, আইইআর গেট, চারুকলা গেট এবং সমাজ কল্যাণ ইনস্টিটিউটের ২ গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ঢাবি ছাত্রদল। তালার সাথে ঢাবি ছাত্রদলের লাগানো পোস্টারগুলোতে লেখা রয়েছে, “দেশ বাঁচানোর অবরোধ সফল হোক”, “দেশ বাঁচাতে অবরোধ”, “দেশ রক্ষার অবরোধ সফল হোক”।
অবরোধের সমর্থনে শাখা ছাত্রদল এই কর্মসূচি পালন করেছে জানিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, দেশ বাঁচানো, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও এই কর্মসূচি পালন করছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেশ রক্ষার এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কিছু আওয়ামীপন্থী শিক্ষক জোরপূর্বক শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে বাধ্য করছেন। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল তালা মারার কর্মসূচি পালন করেছে।
ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা দেশ বাঁচানোর আন্দোলনকে সমর্থন করে। ক্যাম্পাসে আমরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের আন্দোলনে সমর্থন জানাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহামেদ বলেন, সাধারণ মানুষের সাথে সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের এই শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থনের আহবান জানাচ্ছি। কারণ আমাদের এই লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই, আমাদের এ লড়াই মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে উত্তেজনা। ছাত্রদলের এসব কর্মসূচীর বিপরীতে ছাত্রলীগ কর্মীরা পুরো ক্যাম্পাসে মোহরা দিচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে বলে জানা যায়।
শিক্ষাঙ্গনে তালা মারার ব্যাপারে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, আমরা গিয়ে কোনো তালা বা পোস্টার পাইনি। এরা কি নিজেরা তালা মেরে ছবি তুলে আবার নিজেরাই নিয়ে যায় কি না আমরা জানি না। কারণ ভোর ছয়টা বা সাতটা থেকে আমাদের কর্মীরা বিভিন্ন জায়গা আছেন যাতে করে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে ক্যাম্পাসে আসতে পারে। তিনি আরও বলেন, এটা খুবই হাস্যকর। নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে শিক্ষাঙ্গনে তালা ঝুলানোর মতো ন্যাক্কারজনক কাজ তারাই করতে পারে।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদল নাকি তালা দিয়েছে শুনলাম কিন্তু আমরা তো তার বাস্তবিক কোনো প্রমাণ পাই না। আমরাও ছবি দেখেছি পোস্টার ও তালার। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমরা কিছু পাইনি। ছাত্রদল কি ইনভিজিবল দল হয়ে গেল নাকি? এদেরকে দেখা যায় না কেন? এদের কী দশজন কর্মীও নাই? প্রতিপক্ষ এত দুর্বল হলে খেলে মজা পাওয়া যায় না। এভাবে প্রতিপক্ষ বিহীন রাজনীতি আর ভালো লাগছে না।