২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৪৩

২৮ অক্টোবর: ৫ লাখ কর্মী জমায়েতের টার্গেট ছাত্রদলের

ছাত্রদল  © লোগো

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আগামী ২৮ অক্টোবর (শনিবার) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সারাদেশ থেকে এদিন দলটির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এই মহাসমাবেশে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। এই কর্মসূচিতে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই মহাসমাবেশে সারাদেশ থেকে ৫ লাখ কর্মী আনার টার্গেট করেছে ছাত্রদল।

জানা যায়, সারাদেশে ছাত্রদলের জেলা মানের ১২১টি সাংগঠনিক ইউনিট রয়েছে। প্রতি ইউনিটে গড়ে ১৫ থেকে ১৮টি থানা ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি থানা ইউনিটে অসংখ্য ইউনিয়ন/ওয়ার্ড ইউনিট রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটকে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক আনার জন্য বলা হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ ছাড়া সবাইকে ওইদিন নয়াপল্টনে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।   

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের একাধিক নেতা জানান, চলতি সপ্তাহে ২৮ তারিখ মহাসমাবেশের প্রস্তুতি হিসেবে ‘সাধারণ সভা’ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সেখানে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বিষয়ে এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের ভূমিকার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

ছাত্রদলের সেই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যদি পুলিশ বা সরকার আগে এসে হামলা করে তাহলে তা প্রতিহত করবে নেতাকর্মীরা। 

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক এইচ এম আবু জাফর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা বর্তমান সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন করছি। ২৮ অক্টোবর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করবো। যদি পুলিশ অথবা কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের উপর হামলা করে তাহলে আমরা চূড়ান্ত প্রতিরোধ করবো। সরকার পতন করেই ছাড়বো। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা দ্বীন ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ওইদিন মহাসমাবেশে অংশ নেবেন। এটা হবে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন। তবে সরকারি কোনো বাহিনী যদি এই আন্দোলন বানচালের চেষ্টা কিংবা হামলা করে তাহলে বিএনপি থেকে যে নির্দেশনা আসবে তা তাৎক্ষণিকভাবে পালন করবে ছাত্রদল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ব্যাপক প্রস্তুতি
২৮ অক্টোবর সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী আনার নির্দেশনা রয়েছে।  

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রস্তুতি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম-সম্পাদক গাজী সাদ্দাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ছাত্রদলের অন্যতম শক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। সর্বোচ্চ সংখ্যক উপস্থিতি নিয়ে সেদিন আমরা থাকবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। 

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে এই সরকারকে প্রতিহত করবো। প্রশাসন আমাদের সাথে যে ভাষায় কথা বলবে আমরা সেই ভাষায় কথা বলবো।  

অনেক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন
মহাসমাবেশে অংশ নিতে ইতোমধ্যে ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসেছেন। আজকে-কালকের মধ্যে আরো নেতাকর্মী ঢাকায় আসবেন বলে ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে।

ছাত্রদলের নেতারা জানান, বিশেষ করে সরকার হঠাৎ করে যানবাহন বন্ধ করে দিলে যেন কোনো সমস্যা তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই নেতাকর্মীরা দূরের ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকায় চলে এসেছে। ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা ২৮ তারিখ সকালে আসবে বলে জানা যায়। 

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন রিপন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২৮ তারিখ মহাসমাবেশে ছাত্রদল সবার অগ্রভাগে থাকবে। অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় পৌঁছেছেন। অনেকে আসছেন। ছাত্রদল অগ্রভাগে থেকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে। 

ছাত্রদলের প্রস্তুতি বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যে কোনো পরিস্থিতির জন্য ছাত্রদল সব সময় প্রস্তুত থাকে। আমরা আমাদের সাংগঠনিক নির্দেশনা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি। বিএনপি সমাবেশ ডাকলে মহাসমাবেশ হয়, আর মহাসমাবেশ ডাকলে মহাসমুদ্রে পরিণত হয়। আমরা ছাত্রলীগের মতো কাউকে জোর করে সমাবেশে আনতে হয় না। অধিকার সচেতন সকল মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবে। 

ছাত্রদল এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটবে।