০৮ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:৪৯

‘কৌশলে’ বিকাশ দোকানির টাকা আত্মসাৎ, হাতেনাতে ধরা ছাত্রলীগ নেতা

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান তূর্য  © সংগৃহীত

রাজধানীর নীলক্ষেতে একটি বিকাশের দোকান থেকে ‘কৌশলে’ টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত দোকানি ও আশপাশের দোকানদাররা তাকে মারধর করে। এরপর আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিয়ে ওই ঘটনার মিমাংসা করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা। রবিবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে।

অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগের নেতার নাম সাইফুর রহমান তূর্য। তিনি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের গণশিক্ষা বিষয়ক উপ-সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের অর্গানাইজেশন, স্ট্রাটেজি এন্ড লিডারশিপ বিভাগের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী  নীলক্ষেতের দোকানদার সুমন রানা বলেন, অভিযুক্ত সাইফুর রহমান তূর্য বিকাশের টাকা তুলতে বা ক্যাশইন করতে আমার দোকানে নিয়মিত আসতো। শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতেও সে আমার দোকানে এসেছিল; তখন সে আমার বিকাশের পাসওয়ার্ড অগোচরে দেখেছিল। পরবর্তীতে রবিবার সে ২০০ টাকা ক্যাশইন করতে আসে যখন আমি নামাজ পড়তে বের হচ্ছিলাম।

সে আমার পূর্ব পরিচিত থাকায় আমার ফোন তাকে নাম্বার লিখতে বললে সে নিজের অন্য একাউন্টে ৭ হাজার ৬০০ টাকা ক্যাশইন করে অন্য একটি নাম্বার দিয়ে সেখানে আরও ২০০ টাকা ক্যাশইন করতে বলে। আমি অতিরিক্ত টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ৭ হাজার ৬০০ টাকা দিতে বললে সে দোকান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে।

তখন আমি আশপাশের দোকানিদের ধরতে বললে তাকে আটক করলে সে নিজেকে জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী বলে দাবি করে। পরবর্তীতে আমি হল শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি রুবেল হোসেনকে এবং অন্য একজন হল সভাপতি কামাল উদ্দিন রানাকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে রানা ভাই আমাকে পাওনা টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে আমি পাওনা ৭ হাজার ৬০০ টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেই।

এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন রানা বলেন, তুর্য হল ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক। ঘটনা যখন ঘটেছে আমি ছিলাম না। দোকানদার সুমন আমাদের পরিচিত। ঘটনা ঘটার পর আমাকে ফোন দিলে আমি ওদেরকে বলেছি হয় আপনারা শাস্তি দেন; নয়তো টাকাটা নিয়ে ছেড়ে দেন। পরে তুর্যকে বলেছি টাকা ফেরত দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে। 

তিনি জানান, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং হলের জন্য খুবই ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা। আমরা অভিযুক্ত তূর্যের বিরুদ্ধে খুব দ্রুতই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেবো।

এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন জানান, এই ছেলে আগে আমার সাথে রাজনীতি করত। তবে তখন এমন ছিল না। পরবর্তীতে জোনভিত্তিক রাজনীতি হওয়ার কারণে এখন সবাই নিজেদের পছন্দভিত্তিক নেতার সাথে রাজনীতি করে। আজকে যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা খুব ন্যাক্কারজনক। বিকাশ দোকানদার সুমন আমাদের পরিচিত সে এ ঘটনার পরেই আমাকে কল দিয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও হল ছাত্রলীগ আলোচনা করে ওকে বহিষ্কার করা হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান তূর্য বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির মধ্যে হয়েছিল। পরবর্তীতে হল সভাপতি কামাল ভাই বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন।