সরকারের পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবি ছাত্রশিবিরের
সরকারের পদত্যাগ, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমানের মুক্তিসহ সাত দফা ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। আজ রবিবার বিকেলে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি তুলে ধরা হয়। এতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান লিখিত বক্তব্য রাখেন।
এসময় তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে ইসলামী ছাত্রশিবির অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ১০ হাজার ৩৫৮টি রাজনৈতিক মামলায় লক্ষাধিক নেতাকর্মী আসামি হয়েছে। ২৮ হাজার ৭২৩ জন কারাবন্দী হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাত দফা দাবি শুধু ছাত্রশিবিরের নয়, এ দাবি গোটা ছাত্র সমাজের। এই দাবি না মানলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্র সমাজকে সাথে নিয়ে তীব্র গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে দাবিসমূহ আদায়ে ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে সকল ছাত্রসংগঠনকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে ভূমিকা পালনের জন্য আহবান জানাচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক মহল, পেশাজীবী শ্রেণিসহ সকল শ্রেণির মানুষকে দাবি আদায়ে রাজপথে নামার আহবান জানাই।
সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে; আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিঞা গোলাম পরোয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান, সেলিম উদ্দীন, মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমানসহ সকল আলেম ওলামা, ছাত্রনেতা ও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে; ছাত্রশিবিরের গুম হওয়া ৫ জন নেতাকর্মীসহ সারাদেশে গুম হওয়া সকলকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সারা দেশের অফিসসমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে খুলে দিতে হবে। সেই সাথে ছাত্রসংগঠন হিসেবে সকল রাজনৈতিক ও ছাত্রবান্ধব কর্মসূচি নির্বিঘ্নে পালনের সুযোগ দিতে হবে; দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে সকল ছাত্র সংগঠনের সহ-অবস্থান নিশ্চিত করা ও ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতির সুস্থ ধারা চালু করতে হবে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসসমূহকে নিরাপদ করতে হবে; জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ বাতিল করে নৈতিকতাসমৃদ্ধ, কারিগরি ও বাস্তবমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে সকল পর্যায়ে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক থাকবে। সেই সাথে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সংস্কার ও উন্নত করে আরও যুগোপযোগী করতে হবে; শিক্ষার সকল পর্যায়ে অর্থাৎ প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশুদের অবৈতনিক শিক্ষা দান নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে কাগজ-কলমসহ সকল প্রকার শিক্ষা উপকরণের মূল্য হ্রাস করতে হবে; দেশের মোট বাজেটের ২৫ ভাগ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দিতে হবে এবং শিক্ষা বাজেটের এক-চতুর্থাংশ গবেষণায় ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারী ভ্যাট হ্রাস করতে হবে।