কলেজে পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রদল কর্মীকে বেধড়ক মারধর ছাত্রলীগের
রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে বিভাগের পরীক্ষা দিতে এসে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রদল কর্মী সোহাগ মিয়া। তিনি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কলেজে বি ও সি ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার সোহাগ মিয়া জানান, আজ দুপুরে আমার ইংরেজি বিষয়ের টেস্ট পরীক্ষা ছিল। আমি পরীক্ষা দিতেই গিয়েছিলাম। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার কর্মীরা পরীক্ষার হলে এসে আমি ছাত্রদল করি কিনা জানতে চায়। আমি বলি আমি ছাত্রদল করি। বাবা বিএনপি করে চাচা আওয়ামীলীগ করে। যা যা জিজ্ঞেস করছে আমি সত্য কথা বলছি। পরে তারা চলে যায়।
“এরপর আমি পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর আমাকে ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী, আশিক ও নাম না জনা বেশ কয়েকজন মারধর করে। এরপর আমায় ধরে ছাত্র সংসদের নিয়ে যায়। সেখান থেকে বের হওয়ার পর কলেজের বি ও সি ভবনের সামনে আমায় আবার বেধড়ক মারধর করে। আমি এখন ইসলামি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।“
এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইরফান আহমেদ ফাহিম বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার হল থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে একজন শিক্ষার্থীর উপর এই ধরণের ন্যাক্কারজনক হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। নিরপরাধ একজন মানুষকে এভাবে মারা যায়? কার কাছে বিচার চাইবো? কে বিচার করবে? আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমরা সন্ত্রাস মুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ক্লাস ও পরীক্ষা দেওয়ার নিশ্চয়তা চাই।
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ছাত্রলীগ সবসময় সচেষ্ট। ক্লাস পরীক্ষা থাকলে যে কোনো দলমতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।তবে যদি কেউ সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে চায় সেক্ষেত্রে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ তা প্রতিহত করবে। ঘটনাটি কি ঘটেছে তা শুনে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবু জাফর বলেন, মারধরের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে পুরো ঘটনাটি আমার জানা নেই। তাছাড়া ভুক্তভোগী বা অন্য কেউ এবিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি।
মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থী যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে তাহলে সে বা তার অভিভাবক যদি বিষয়টি আমাদের জানায় তাহলে অধ্যক্ষের সাথে আলোচনা করে আমরা তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।