২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৩

সেক্রেটারি পদপ্রার্থী দূর্জয়কে বিতর্কিত করার চেষ্টা

তাওহীদ দূর্জয়  © সংগৃহীত

প্রায় সাত বছর পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলন হয়েছে। এদিন পুরাতন কমিটির বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তবে নতুন কমিটি ঘোষণা না করেই সম্মেলন শেষ করেন তারা। এরপর থেকেই নেতৃত্বের দৌঁড়ে এগিয়ে থাকা নেতাদের নিয়ে সামনে আসতে থাকে নানান আলোচনা-সমালোচনা। বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয় সম্ভাবনাময়ীদের। এবার সেই বলির পাঠা হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদ দূর্জয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রবিবার 'রাবি ছাত্রলীগ নেতা দুর্জয়ের সঙ্গে শিবির সংশ্লিঠতা' শিরোনামে নাম সর্বস্ব একটি  দৈনিকে  সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে পরের দিনই নিজেদের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে পত্রিকার কতৃপক্ষ। সেইসঙ্গে তারা এ নিয়ে একটি সংবাদও প্রকাশ করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, যে ছবিকে কেন্দ্র করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল সেটি দুর্জয়ের বিভাগ ইসলামিক স্টাডিজের একটি প্রোগ্রামের। এতে শিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিলো না। এছাড়া আমরা এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখেছি দুর্জয়ের পরিবার স্থানীয় আওয়ামীলীগের সঙ্গে জড়িত।

আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, যেসব ছবি ব্যবহার করে দূর্জয়ের বিরুদ্ধে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়। এগুলো ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে বিভিন্ন প্রোগ্রামের। এখানে দূর্জয় ছাড়াও একাধিক ছাত্রলীগ নেতা ছবি রয়েছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে।  

শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি মো.মোমিন বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে একটি গ্রুপ আমাদের বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি নিয়ে দূর্জয়ের বিরুদ্ধে নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। এসব ছবিতে আমি নিজেও আছি। একটি বিভাগে বিভিন্ন মতে মানুষ থাকতে পারে। বিভাগের অনুষ্ঠানে সবাই আসে। সেখান থেকে তোলা ছবি নিয়ে একজন ছাত্রলীগকে শিবির বানানো হীনমণ্যতার বহিঃপ্রকাশ। 

তিনি আরও বলেন, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নেওয়ার পরই আমাকে হলে নেতা বানানো হয়েছে। 

ক্যাম্পাসে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একাধিক সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তারা জানান, দূর্জয় সঙ্গে শিবির সংশ্লিষ্টতা তথ্য তারা পায়নি। যে ছবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এগুলো তার বিভাগের প্রোগ্রামের।

তাওহীদ দূর্জয়ের রাজনৈতিক ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট বিষয়ে তার এলাকা কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ জামাল বলেন, পাশের গ্রামে হলেও, আমার বাড়ি থেকে হাফ কিলোমিটার দূরেই তাওহীদের  বাড়ি। ওদের বংশের সবাইতো আওয়ামী লীগ করে। আমাদের ইউনিয়নে তো বলা যায়, মাত্র ২ আনা মানুষ হয়তো বা অন্য দল করে। ওর পরিবারের সবাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত, তৌহিদ নিজেও ছোটোবেলা থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথেই ছিল।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, আমি যতটুকু জানি, ওর সবকিছুই পজিটিভ। তৌহিদের পরিবার ও বংশ আমাদের আওয়ামী লীগ পরিবারের মধ্যেই আছে। একটু মান-অভিমান থাকতে পারে। তৌহিদ মনে হয় স্থানীয়ভাবে রাজনীতির সাথে ছিলনা, তবে ওর বংশটা আওয়ামী লীগমনা এবং সে ছেলে হিসেবেও ভালো।

কুড়িগ্রাম জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক রেদয়ানুল হক দুলাল বলেন, আমাদের এদিককার ছেলেপেলে যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়, তারা সাধারণত চান্স পাওয়ার পরেই রাজনীতির সাথে জড়িত হয়।  তবে তৌহিদ ভালো ছেলে তার পরিবারও আওয়ামীলীগমনা।

কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, তাকে আমি চিনি। সে ভালো ছেলে।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তাওহীদ দূর্জয় বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায়, একটি পক্ষ আমাকে নিয়ে ব্যতিক্রমী ষড়যন্ত্র করছে। আমার পুরো বংশই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। আমিও ছোটোবেলা থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথেই ছিলাম। অথচ, তারা প্রচার করার চেষ্টা করছে, আমি শিবিরের সাথে জড়িত। এটা প্রমাণ করতে আমার ডিপার্টমেন্টের অনুষ্ঠানের সময় তোলা একটা ছবি দেখাচ্ছে তারা। এরকম হাস্যকর অভিযোগ কি কারণে তারা আমার বিরুদ্ধে আনছে, সেবিষয়ে আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবকরা অবশ্যই খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নিবেন বলে আমি মনে করি।