১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৫

স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে বিদায়ের হিড়িক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

  © লোগো

প্রতিষ্ঠার এক যুগ পার হলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নেই ছাত্রলীগের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের অনুসারী হিসেবে অনেক শিক্ষার্থীই নিজেদেরকে সংগঠনটির নেতা দাবি করে আসছে। এভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও দীর্ঘদিন যাবৎ কমিটি না হওয়ায় এবং রাজনৈতিক কারণে মামলা-হামলার শিকার হয়ে অনেকেই এখন হতাশ। সম্প্রতি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর হিড়িক পরেছে সেখানকার ছাত্রলীগের কর্মীদের মাঝে। তবে শিগগির কমিটি দেওয়ার কথা জানিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। 

জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রলীগের কর্মীসভা ও পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত নেয়া হলেও এখনো কোন কমিটি হয়নি সেখানে। কমিটি না হওয়ার জেরে গত একমাসে প্রায় ডজনখানেক ছাত্রলীগ কর্মী রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকেই এ নিয়ে ফেসবুকে দিয়েছে আবেগঘন স্ট্যাটাস। 

রাকিব হাসান নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন লিখেছেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সকল কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলাম। বড় এবং ছোট সবার জন্য শুভকামনা । 

গাজী মাশরুর নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মী লিখেছেন, দীর্ঘদিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ায় রাজনীতিটা আর টেনে নিতে পারছি না... বিদায়। 

এ ধরণের সিদ্ধান্তের বিষয়ে রাকিব হাসান জানান, আমি ক্লাস এইট থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিব আদর্শকে সমুন্নত রাখবো এই উদ্দেশ্য ভর্তির পর থেকেই রাজনীতি করে আসছি। কিন্তু দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় আমি হতাশ। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেড়েই চলেছে। এসব কোন্দলকে কেন্দ্র করে হওয়া মামলায় নির্দোষ অনেককে আসামি করা হচ্ছে। এই ধরনের অপচর্চার মধ্যে রাজনীতি করে যাওয়াটা নিজের জন্য শুভকর নয় বলেই মনে করছি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রলীগ কর্মী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, প্রায় এক দশক ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আমি। বারবার কেন্দ্র থেকে কমিটি হবার আশ্বাস দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পরিচয় হয় নি আমাদের। সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় অনেকে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অপরাধের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। এতে করে দোষারোপের শিকার হচ্ছি আমরা, জীবন নষ্ট হচ্ছে আমাদের। এতে করে অনেককেই দেখছি হতাশ হয়ে পরছে। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হতাশ না হবার আহ্বান জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান। তিনি বলেন, রাজনীতি একটা দীর্ঘ ও চলমান  প্রক্রিয়া। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদেরকে পরামর্শ দেবো কেউ যেন হতাশ না হয়। কেন্দ্রে যারা আছেন তাদেরকেও বলবো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে যেন সাংগঠনিক কাঠামো দেবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। 

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারটি আমাদের মাথায় আছে। দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট সেটি। দ্রুতই সেখানে কমিটির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।