সাংবাদিকের স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার, বানোয়াট দাবি করে থানায় অভিযোগ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগের যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখার এক নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম এস এম ইকরামুল কবির দ্বীপ। তিনি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আজ রবিবার যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়।
তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার দাবি, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যে। ফেসবুকে এক সাংবাদিক ভুয়া স্ক্রিনশট তৈরি করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে প্রোপাগোন্ডা ছড়ানোর দায়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেছেন।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা দ্বীপ বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক ইমেজ ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গতকাল ভোরের পাতার সাংবাদিক উৎপল দাস তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে আমার নামে একটি ভুয়া স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। যা আমার নজরে আসার সাথে সাথেই আমি উৎপল দাসের সাথে কথা বলি কিন্তু সে আমার কোন সদুত্তর দিতে পারি নাই।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক উৎপল শুধু বলেছে তাকে কেউ একজন দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি আজ যশোর সদর থানায় অভিহিত করি এবং অভিযোগ দায়ের করি। আমার ফেসবুক আইডিতে থাকা সহস্রাধিক ছাত্রলীগ নেতারকর্মীদের কেউ এমন কোনো পোস্টের প্রতক্ষদর্শী নয়, তাহলে সে একাই কিভাবে এই পোস্ট দেখল বা পেল এটি আমার প্রশ্ন রইল। তাছাড়াও স্ক্রিনশটটি আপনারা ভালো করে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন যে এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। তাছাড়াও সাঈদী মারা যাওয়ার বিশদিন পর কেন এই পোস্ট ভাইরাল হলো? আমি মনে করি ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী নোতারা যখন সাইদির নামে পোস্ট করাতে বহিষ্কার হয়েছে ঠিক তখনই একটি কুচক্রী মহল আমার নামে ভুয়া আইডি খুলে ষড়যন্ত্র করে এই ঘৃণিত কাজ করেছে।পাশাপাশি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি/সেক্রেটারি কেন আমাকে কোন কিছু না জানিয়ে, শোকজ না করে বহিষ্কার করছেন আমার সেটা জানা নেই। আমি এর সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার চাই।
বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা বলেন, গতকাল রাতে ঢাকার এক সাংবাদিকের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল কবির দীপ যুদ্ধপরাধীর দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে আমরা কেন্দ্রেীয় ছাত্রলীগের সাথে কথা বলি এবং তারা আমাদের ব্যবস্থা নিতে বলেন। তাদের নির্দেশনায় আমরা তাকে সাময়িক বহিষ্কারের সীদ্ধান্ত নিয়েছি এবং তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কে বলেছি, তারা ঘটনার যাচাই-বাঁচাই করে স্থায়ী সীদ্ধান্ত নিবেন।
এ বিষয়ে ইকরামুল কবির দ্বীপকে নিয়ে পোস্ট প্রদানকারী সাংবাদিক উৎপল দাস বলেন, আমাকে কেউ একজন ছবিটি দিয়েছিলো তাই আমি নিজস্ব ফেসবুকে পোস্ট করেছি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী আমাকে অনুরোধ করলে তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছি। এ বিষয়ে সত্যতা জানতে চাইলে তিনি কোনো কিছু না বলে কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে মুঠোফোনে কল দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।