শান্তি সমাবেশে নিহত মাদ্রাসাছাত্রের খুনিদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
রাজধানীতে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের পর দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ রেজাউল করিমের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শুক্রবার (৪ জুন) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে জুমার নামাজের পর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল থেকে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের পর দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ রেজাউল করিমের হত্যার প্রতিবাদে ও এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ রেজাউল করিমের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছিলাম। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তাদের সমাবেশের মাঝে পড়ে আমার ভাই মারা গেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কোনো দুঃখ প্রকাশ পর্যন্ত করেনি। আমাদের দুর্বল ভাবলে চলবে না। আমরা দেশের সমাজ পরিবর্তন করতে কাজ করি। আমার ভাইয়ের হত্যার বদলা নিয়ে আমরা ঘরে ফিরব।
এসময় বক্তারা হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হকের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ভারতকে খুশি করার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা গ্রেপ্তার করেছে তারাও জানে উনি নিরপরাধ। এ দেশে আইনের শাসন থাকলে মামুনুল হক মুক্ত হতেন। এসব কর্মকাণ্ড এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে আন্দোলন করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি পরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় হাফেজ রেজাউল করিমের হত্যার এক সপ্তাহ হয়ে গেল কিন্তু তার খুনিদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। আর এই হামলা যদি বিরোধী দলের কেউ করত তাহলে এতক্ষণে তার ১৪ গোষ্ঠীকে গ্রেপ্তার করা হতো। তারা শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে জাতিকে শান্তির পরিবর্তে অশান্তি দিচ্ছে।
ওই দিন শান্তি সমাবেশের মধ্যে একজন নিরীহ মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে, এটা নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার অচিরেই করতে হবে। রেজাউল করিম একজন হাফেজ, সে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। ঘটনার দিন ওষুধ নেওয়ার জন্য সে এসেছিল, তার কোনো অপরাধ ছিল না। সরকার বিগত ১৫ বছরে অনেক মায়ের কোল খালি করেছে। সামনে আর কোনো সন্তানকে এভাবে জীবন দিতে দেওয়া হবে না—বলেন মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী।
তিনি বলেন, গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, এ দেশের মানুষ যেভাবে নির্বাচন চায় সেভাবে নির্বাচন হবে। যেনতেন করে আর নির্বাচন করতে পারবেন না। যদি আগামীতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। যদি রেজাউল করিমের খুনের বিচার না করা হয় আর আপনারা ক্ষমতায় না আসেন, তাহলে প্রত্যেকটা হত্যার বিচার করা হবে। শাপলা চত্বরের খুনের বিচার করা হবে, ২০২১ সালের খুনের বিচার করা হবে। কেউ রেহাই পাবেন না। যেনতেন করে নির্বাচন করে আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।
গত পরশুদিন রেজাউল করিমের হত্যার প্রতিবাদে সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর মিছিল করতে গিয়েছিল। তার ওপর যে হামলা হয়েছে, সেই হামলার আমরা নিন্দা জানাই। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি রেজাউল করিমের খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন নিয়ে ছাত্রসমাজ মাঠে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা রাকিবুল ইসলাম ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান প্রমুখ।