ঈদ নিয়ে স্মৃতিচারণ ঢাবি ছাত্রনেতাদের
ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদকে কেন্দ্র করে সবারই কিছু না কিছু স্মৃতি জমে আছে। বিশেষ করে ছোটবেলার সেই স্মৃতি। তেমনি ব্যতিক্রম নয় ছাত্রনেতাদের ক্ষেত্রেও। ছোটবেলার মজার স্মৃতি ও ঈদে কুরবানির গরু কেনা, মাংস বিলি, পশুকে খাওয়ানো এবং তাদের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান। তাদের স্মৃতিচারণ তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ঢাবি প্রতিনিধি রিফাত হক—
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন স্মৃতিচারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আগে কুরবানী ঈদ আসলে গরুর হাটে যেতাম। বাড়িতে গরু নিয়ে আসলে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ কাজ করতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকে বাবা কুরবানীর গরু কিনে। গরু কিনার পর আমাদের শুধু অংশগ্রহণ করা হয়। আগের মতো হাটে যাওয়ার সুযোগ হয় না এবং পশু কিনার আমেজটিও নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আমাদের ছোট বেলায় অপেক্ষা করতাম কবে কুরবানী ঈদ আসবে আর আমরা আনন্দ চিত্তে গরুর হাটে যাবো। বড় বড় গরু দেখবো এক হাট থেকে আরেক হাটে দাদা, বাবা,চাচাদের সাথে পছন্দ করে গরু কিনা শেষে গরুর রশি হাতে হেঁটে বাড়িতে আসতাম। আসার সময় মানুষজন গরুর দাম জিজ্ঞেস করতো সবার আগে গরুর দম বলার জন্য প্রস্তুতি থাকতাম, বাড়ীতে গরু এনে চিৎকার করে বলতাম গরু এনেছি। গরু বাঁধার জায়গা ঠিক করে গরুর খাবারের জন্য দৌঁড়াতে শুরু যেমন ভাতের মাড়, খড়, ঘাস,ধানে বুশি ইত্যাদি অনেক রাত গরু পাহারা দেওয়া সকল বন্ধুদের সাথে নিয়ে, গরু জবাই করার চুরি, চাকু ধাঁর দেওয়া। ঈদের দিন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গরু গোসল করানো, ঈদের নামাজ আদায় করে সবার আগে আমাদের গরু জবাই করার জন্য হুজুরের পিছনে ঘুর ঘুর করতাম। সবার আগে মাংস নিয়ে রান্না করে খাওয়া এবং আত্মীয় স্বজন ও গরীব দুঃখীদের মাঝে ভিতর করা সেই দিনগুলো ছিল অত্যান্ত আনন্দের ও উৎসব মুখর, অনেক মিস করি সেই দিনগুলো প্রায় মনে হয় যদি ফিরে যেতে পারতাম শৈশবের দিনগুলোতে কতইনা আনন্দিত হতাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক ঈদ উদযাপন নিয়ে বলেন, ২০১২ সাল থেকে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই আমার ঈদটা অন্য রকম কাটে। আমি কিছু ঈদ ফ্যামিলির সাথে করি। আবার ঢাকাও আমাদের কমরেডদের সাথে ঈদ করে থাকি। এটা আমার জন্য আনন্দের। কমরেডদের একটা গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করি। টিম করে শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাসায় যাই। মাংস বিভিন্ন জায়গা থেকে আসলে সেগুলো রান্না করি। পাশাপাশি কমরেডদের নিয়ে বিকেলে ঘুরতে যাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি কুবরানী উপলক্ষ্যে কয়েক সপ্তাহ হাতে রেখেই গরু কেনার প্রস্তুতি, আর ঈদের কয়েকদিন আগ থেকেই মা-দাদী-চাচীদের রান্নার প্রস্তুতি৷ ঈদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এলাকায় কোন গরুটা সবচেয়ে বড় তা বের করা৷ ঈদের নামাজের পর গোটা এলাকাবাসী মিলে একটা একটা তাগড়া গরু ফেলার আর কুরবানী করার স্মৃতি সবসময়েই আনন্দ দেয়৷ কুরবানীর পুরো প্রক্রিয়া, জবাই থেকে বিলি বন্টন আর চামড়া বিক্রি পর্যন্ত গোটা ব্যাপারটাতে আনন্দ নিয়ে কাজ করে সবাই৷ ঈদুল আযহা আমাদের আত্মিক বন্ধনকে দৃঢ় করে৷ এবারও সবার ঈদ কাটুক আনন্দে এ প্রত্যাশা রাখি৷