মঙ্গল শোভাযাত্রায় দফায় দফায় ছাত্রলীগের বাধার মুখে বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা
বিভিন্ন দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ায় বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের দুই দফায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের প্ল্যাকার্ডও ভেঙে দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের সামনে শোভাযাত্রায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও শোভাযাত্রা শেষে ছাত্র জোটের উদ্যোগে ডিএসএ বাতিলের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের বিরুদ্ধে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতৃত্বে ‘ডিএসএ বাতিল করো’, ‘নববর্ষে পরাধীনতার শিকল ভাঙো’, ‘মুখ বন্ধ করে দেওয়া কি স্বাধীনতা?’, ‘চাল জোটে না ইলিশ রুই কই পাবো?’ প্রভৃতি স্লোগান লিখিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন বামধারার ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেখানে মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ওম প্রকাশের নেতৃত্বে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এ সময় শোভাযাত্রায় হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
এরপর বাম ছাত্র নেতারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিরোধী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন। সেখানেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টররা তাদের বাধা দেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বিনা অনুমতিতে তাদের কর্মসূচি না পালনের কথা বলেন। এরপর তিনি দ্রুত কর্মসূচি শেষ করার কথা বলে চলে যান।
এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান অভিযোগ করে বলেন, শোভাযাত্রায় ডিএসএ বাতিলের নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণ করলে চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগ নেতা ওম প্রকাশ আমাদের প্ল্যাকার্ড ভেঙে দেয়। আমাদের বাধা দেয়। এরপর বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এমনকি আমাদের নারী কর্মীদের গায়েও হাত তুলেছে।
ছায়েদুল হক নিশান বলেন, একটা সর্বজনীন উৎসবে সব স্তরের মানুষ তার দাবি-দাওয়া নিয়ে অংশ নেবে এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু ছাত্রলীগ আমাদের ন্যক্কারজনকভাবে হামলা করেছে। এরপর সহকারী প্রক্টররা এসে আমাদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। অনুমতি না নেওয়ার ব্যাপারে প্রক্টর জবাবদিহিতা চেয়েছেন। এটি আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতি নষ্ট করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিকল্পিত উদ্যোগের ধারাবাহিকতা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায়ও ওরা আমাদের কন্ঠ রোধ করতে চায়। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করে প্ল্যাকার্ড ভেঙ্গে ফেলে, লাঞ্চিত করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈসহ গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীদের।
এবিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চারুকলার শিক্ষার্থীরা এতদিন ধরে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসছিল। এর মধ্যে বাইরের কেউ ঢুকে যদি এর ক্রেডিট নিতে চায় তাহলে বিষয়টা কী কেউ মেনে নিবে? সেখানে এরকমই হয়েছিল। তারা চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রার মিছিলে ঢুকতে চাইলে বাঁধা দেওয়া হয়। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কথা শুনিনি।
ঢাাবি প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা তাদের বাধা দেয়নি। এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচির বিষয়ে আমাকে আগে থেকে ইনফর্ম করার দরকার করার দরকার ছিল তা বলেছিলাম। আমি তাদেরকে উঠে যেতেও বলি নাই। তোমরা একটা নির্ধারিত জায়গা পর্যন্ত থাকো, তারপর অন্য জায়গায় গিয়ে বসো।