সভাপতির পা টিপছেন অন্য দুই ছাত্রলীগ নেতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় ছিলেন নানা কারণে। এবার তার নতুন করে আলোচনায় আসার কারণ হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, রেজাউল হক রুবেলের পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগের উপ কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ ও উপ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শফিউল ইসলাম। এ সময় সভাপতি মোবাইলে টিকটক দেখছিলেন, আর অনুসারীদের দিয়ে নিজের পা টিপাচ্ছেন।
ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে চবি শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে। ছবিটি শেয়ার করে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন- ‘যোগ্যতার চেয়ে বেশি কিছু পেয়ে গেলে হয়তো এমনি হয়। আমরা গর্বিত এমন সভাপতি পেয়ে’। মূহুর্তেই ছবিটা ভাইরাল হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এমন দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
রেজাউল হক রুবেল বর্তমান নেতাকর্মীদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ তিনি। চবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ সেশনের এ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পার করেছেন ১৭ বসন্ত। গত ৫-৭ বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া বেশিরভাগ শিক্ষকই ছাত্রলীগের এ নেতার চেয়ে বয়স এবং ব্যাচের দিক থেকে জুনিয়র। এতকিছুর পরও তিনি এখনো নিজেকে শিক্ষার্থী হিসেবেই পরিচয় দিতে পছন্দ করেন।
তিনি চবির শাহ আমানত হলের তৃতীয় তলায় ৩১১ নম্বর কক্ষে থাকেন। তিনজনের আসন আপাতত একাই দখল করে আছেন ছাত্রলীগের এ নেতা। শুধু তাই নয়, কক্ষের দরজায় বড় করে লেখা আছে, ‘রেজাউল হক রুবেল, সভাপতি, চবি ছাত্রলীগ’। এমন বিলাসী জীবনযাপনেই অভ্যস্ত এই ছাত্রলীগ নেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগ সভাপতি বিভিন্ন সময় তার কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তবুও তিনি কখনো নিজেকে শুধরাননি। তাছাড়া কর্মীরা বেশিরভাগ তার ৮/১০ বছরের ছোট, তাহলে এমন কাজ তো করানোই স্বাভাবিক। নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা না থাকায় এরকম সেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কেউই ছাত্র থাকা অবস্থায় নেতৃত্বের সুযোগ পান না। তাই ছাত্রলীগের অনুসারীরা ধরেই নিয়েছেন নেতৃত্বে আসতে হলে ক্যাম্পাসে ৮-১০ বছর থাকতে হবে কমপক্ষে। আমাদের এ জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনা উচিৎ।
এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পরার পর থেকেই কেউই তার সাথে মুঠোফোনে কোন ধরনের যোগাযোগ করতে পারছেন না; তার ফোনের সংযোগটি বন্ধ রয়েছে।