জাবির ভর্তি পরীক্ষায় শিফট পদ্ধতি বাতিল চায় ছাত্র ফ্রন্ট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষার শিফট পদ্ধতি বাতিল ও ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। আজ বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সদস্য সোহাগী সানিয়া। তিনি বলেন, প্রশাসন করোনা পরবর্তী সময় ভর্তি ফি বাড়িয়ে দিয়েছে। যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবারের আয় কমে গেছে, সেখানে ভর্তি ফর্মের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে বৈষম্য থাকে। বিকল্প পদ্ধতি প্রণয়ন করে অচিরেই শিফট পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।
ছাত্রফ্রন্টের সদস্য সজিব আহমেদ বলেন, প্রতিটি ইউনিটে আবেদন ফি ৯০০-১০০০ টাকা, যা অযৌক্তিক। গতবছর প্রায় তিন কোটি টাকা আয় হয়েছে, যা ভিসি এবং শিক্ষকরা ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এটা তাদের একটা ব্যবসার মাধ্যম।
সদস্য শারমিন আক্তার বলেন, প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ফরমের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। আবার এই শিফট বৈষম্যের কারণ। কেননা, কোনো শিফটে অনেক বেশি শিক্ষার্থী আবার কোনো শিফটে কম ভর্তি হচ্ছে। অচিরেই এ ভর্তি ফি ও শিফট পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মনোজ কান্তি রায় বলেন, এ মানববন্ধনে আমরা দুটি প্রশ্ন নিয়ে দাঁড়িয়েছি। অভিন্ন প্রশ্নপদ্ধতি ও ভর্তি পরীক্ষার ফি কমানো। প্রশাসন চাইলেই একটি অভিন্ন প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারে। শুধু মাত্র নিজেদের মুনাফা বৃদ্ধির জন্যই তারা এ শিফট বৈষম্য চালু রাখেন। দরিদ্র মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্যই প্রশাসন ফর্মের মূল্য বৃদ্ধি জারি করেছে। তাই সাধারণ মানুষের প্রতি মানবিকতা দেখিয়ে প্রশাসনের উচিত ভর্তি ফর্মের দাম কমিয়ে শিক্ষার্থীদের আওতার মধ্যে নিয়ে আসা।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, বর্তমান যে অবস্থা তাতে শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারকে কিনে নিতে হচ্ছে টাকা দিয়ে। যার যত বেশি টাকা থাকবে সে তত বেশি সুযোগ পাবে। শিক্ষার বরাদ্দ শিক্ষা খাতের বাইরে অন্যান্য দিকে বেড়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের দাবি আপনারা শিক্ষার ধারায় ফিরে আসুন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ভর্তি পরীক্ষার শিফট পদ্ধতি আমরা সংস্কার করেছি, করবো। আমরা সংস্কারের পক্ষেই। সামনের সপ্তাহে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় মিটিং আছে। সেখানে সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেখানে শিফট ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত হলে সেটাই কার্যকর করা হবে।
ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভর্তি পরীক্ষার ফরমের মূল্য যথেষ্ঠ কম নেই। বাকি ৪টি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের ফরমের মূল্য বেশি নয়।