বাকৃবিতে বহিরাগতদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, আহত ৩
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পোস্টার লাগান। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়ে সেই পোস্টারগুলো দেখছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শোয়েব ও সাজ্জাদ।
এসময় ছাত্রলীগের কর্মীরা শোয়েব ও সাজ্জাদকে ছাত্রদলের কর্মী সন্দেহে মারধর করে আটকে রাখেন। পরে আহত শিক্ষার্থী শোয়েবকে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাজ্জাদ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে ধাওয়া করে আটকায়। পরে তাকে মারধর করে তারা চলে যান। ঘটনা জানতে পেরে সাজ্জাদের ভাই সোহাগ ও জাহিদের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন।
ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা ফসিলের মোড়ে খাবার হোটেলে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করতে গেলে দোকানের মালিক বাধা দেন। বাধা পেয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের দিকে যান। এ সময় ওই হলের সামনের বকুল তলায় ভেটেরিনারি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সায়েদুজ্জামানের ওপর অতর্কিত হামলা চালান তারা। এতে ওই শিক্ষার্থী আহত হন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সাজ্জাদ ময়মনসিংহের বয়ড়া ইউনিয়নের করিম ঠিকাদারের ছেলে ও ছাত্রদল করেন।
এ বিষয়ে বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টারের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয় ছাত্রদল পোস্টার লাগাতে পারে। আমার কোনো কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।
বাকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্রদল, জামায়াত, শিবিরের স্থান হবে না। বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগ তাদের কঠোরভাবে দমন করবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, আহত শোয়েব পুলিশ হেফাজতে আছেন। ছাত্রদলের সঙ্গে শোয়েবের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না তা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।