ঢাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতির আত্মহত্যার হুমকি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলার বিচার না পেলে প্রক্টর অফিসের সামনে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর কাছে হামলার বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগ নৃশংস হামলা চালিয়েছে। আমি একটি ছাত্র সংগঠনের নির্বাচিত সভাপতি, আমার গায়েও তারা আঘাত করেছে। যে আঘাত এখনো বিদ্যমান। যারা হামলা করেছে তাদের প্রত্যেকের পরিচয় চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা আজ প্রক্টর স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে এ হামলার বিচার চেয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, আমরা যে হামলার ও আঘাতের শিকার হয়েছি, এ বিচার যদি তিনি না করেন আমি সংগঠনের সর্বোচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে এই প্রক্টর অফিসের সামনে এসে নিজের গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যা করব।
ঢাবি প্রক্টরকে দেওয়া অভিযোগ পত্রে বিন ইয়ামিন মোল্লা উল্লেখ করেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্র অধিকার পরিষদের ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎযাপন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির গেটে উপস্থিত হই। আমার সংগঠনের নেতাকর্মীসহ টিএসসির গেটে উপস্থিত হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের টিএসসিতে প্রবেশে বাধা প্রদান করে। আমরা অনেক অনুরোধ করার পরও তারা তাদের বাধা প্রদান অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আনুমানিক ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
তারা রাস্তার মাঝখানের সিমেন্টের তৈরি কংক্রিটের ডিভাইডার ব্লক (গার্ডার) ফেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস সানির পা ভেঙে দেয়। তারা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমি সহ আমার সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি আখতার হোসেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির ফয়সাল, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ফয়সাল রকিসহ ২৫ জনেরও অধিক নেতাকর্মীকে রাস্তায় ফেলে গুরুতর জখম করে এবং মিলন চত্বরে পুলিশের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে নারকীয় হামলা চালায় যা বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম গুলোতেও প্রচারিত হয়েছে।
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবির জানিয়ে অভিযোগপত্রে বলা হয়, ৮০-১০০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আমাদের ওপর এই নারকীয় হামলায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। জাতীয় গণমাধ্যম ও বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে যা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এই হামলার মাধ্যমে সংবিধানে প্রদত্ত চলাফেরার স্বাধীনতা, সমাবেশ করার স্বাধীনতা ও সংগঠন করার স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে চলেছে। ছাত্রলীগের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ক্যাম্পাসে সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নষ্টসহ শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। ছাত্রলীগের হামলার নেতৃত্বদানকারী ও হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
অভিযোগ পত্র দেওয়ার সময় প্রক্টর অফিসে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আসিফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।