ফের বেপরোয়া ছাত্রলীগ, অপরাধীদের শাস্তি কেবল বহিস্কার
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার, ছাত্র নির্যাতন, হল দখল ও মাদকের কারবারসহ নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে দেশের ক্যাম্পাসগুলো। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্যাম্পাসেই একইভাবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় বরাবরের ন্যায় ভুক্তভুগী হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেও তেমন কোনো আইনী প্রতিকার মিলছে না। কেবল কিছু চাঞ্চল্যকর অপরাধের সঙ্গে অভিযুক্তদের দল থেকে বহিস্কার করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসের মধ্যে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারি, ধর্ষণ, ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক নির্যাতন, হল দখল, সিট বাণিজ্যসহ শতাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সূত্রে জানা গেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা সংগঠিত অপরাধকর্মের অধিকাংশই সামনে আসে না। ভুক্তভুগীরা প্রাণভয়ে নির্যাতনের কথা চেপে যায়। আর কেউ কেউ অভিযোগ দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ নেয় না। এছাড়া, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে গ্রহণ করতে চায় না পুলিশ।
ছিনতাই-চাঁদাবাজি বাড়ছে
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ মিলছে ছাত্রলীগ নেতাদের। চলতি মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় ছাত্রলীগ নেতারা বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন : বইমেলায় চাঁদাবাজির ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করলো ছাত্রলীগ
এর মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পুলিশ পরিচয়ে বইমেলার ৪ ক্রেতার কাছ থেকে চাঁদাবাজি করার ঘটনায় আটক হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের দুই নেতা মোহাইমিনুল ইসলাম ইমন ও রাজিব হোসাইন রবিন। ইমন বাংলা বিভাগ এবং রবিন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস–সংলগ্ন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) মসজিদের সামনে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেখানে একটি কাভার্ড ভ্যান আটকিয়ে চালক ও তাঁর ভাইকে মারধর করে তাঁদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনতাই করেন তিন ছাত্র। ছিনতাইকারী তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, যাঁদের মধ্যে দুজন বিজয় একাত্তর হলের গণরুমে থাকেন। গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে দম্পতির টাকা ও এটিএম কার্ড ছিনতাই ছাত্রলীগ নেতাদের
একই দিন রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় পরিবারের সদস্যসহ মারধর ও ছিনতাইয়ের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক কর্মকর্তা। তাঁদের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ছিনতাইকারীদের দুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, একজন সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের সদস্য।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছিনতাইয়ের শিকার হন দুই শিক্ষার্থী। এসময় দুটি স্মার্টফোন এবং মানিব্যাগ খোয়ান তারা। এসময় ছিনতাইকারীর আক্রমণে আহত হয়েছেন বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মুহাম্মদ মুরসালিন সরকার। গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দিন একাডেমিক ভবনের সামনে আমবাগান থেকে মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চাঁদা না পেয়ে টিকিট কাউন্টারে তালা দিলেন ছাত্রলীগ নেতা
গত ৮ ফেব্রুয়ারি চাঁদা না পেয়ে বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেন লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি। এছাড়াও তিনি বাস কোম্পানি যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনের চালকের এক সহযোগীকে মারধর করেন। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন তার ভাই লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব পাটওয়ারী।
আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চেয়ে বহিষ্কার হলেন ঢাবি হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি ফোন করে চাঁদার জন্য এক ব্যবসায়ীকে তলব করেছিলেন ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল। হলে যেতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে হুমকি-ধমকি এবং এরপর ৩১ জানুয়ারি অনুসারীদের পাঠিয়ে পানির বোতল ভাঙচুর করিয়েছেন তিনি। ইমদাদুলের আগে তার এক অনুসারী ঢাবির একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ওই ব্যবসায়ীকে মুঠোফোনে কল করেন।
মারধর ও নির্যাতন
ছিনতাইয়ের ন্যায় নির্যাতনের ছাত্রলীগের নির্যাতনের মাত্রাও বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। এই নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রী কেউই। গত ৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে পরীক্ষার হলে দেখে লিখতে নিষেধ করায় এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈমের বিরুদ্ধে। ওইদিন ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে এক ছাত্রের খাতা দেখে লিখছিলেন কাজী নাঈম। এ সময় অন্যের কাছ থেকে দেখে লিখতে নিষেধ করেন মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এভাবে পরীক্ষার হলে দেখে লেখার সুযোগ নেই।’ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন এবং পিটিয়ে কলেজ থেকে বদলি করে দেওয়ার হুমকি দেন নাঈম।
আরও পড়ুন: কলেজে শিক্ষককে পিটিয়ে বদলির হুমকি ছাত্রলীগ নেতার
গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ৪ শিক্ষার্থীকে কলেজ ছাত্রাবাসে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। চমেক সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে ওই দিন মধ্যরাত থেকে পরেরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ ও শারীরিক নির্যাতন করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। নির্যাতিত ৪ শিক্ষার্থী হলেন, জাহিদ হোসেন ওয়াকিল, সাকিব হোসেন, এম এ রায়হান ও মোবাশ্বের হোসেন শুভ্র। তারা সবাই এমবিবিএস ৬২ ব্যাচের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে সিএমসি সূত্র। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাহিদ ও সাকিবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইবির হলে ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে রাতভর নির্যাতন ছাত্রলীগের, ভিডিও ধারণ
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে নিয়ে এক ছাত্রীকে মারধর ও শারীরিক নির্যাতনের পর বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নেত্রীদের কথা না শোনার অভিযোগে তাঁকে সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়। মারধর, অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। ভয়াবহ এই নির্যাতনের ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ভয়ে সেই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বাড়ি চলে যান।
একইদিন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে মামলা হয়। মারধরের শিকার ছাত্রলীগ কর্মী ফারদিন কবীর বলেন, সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. সুমন ভূঁইয়ার আদালতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে আদালত সিলেটের জালালাবাদ থানার ওসিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মামলার আবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক সজীবুর রহমানের অনুসারী বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামায় আরও ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী নির্যাতনে বেপরোয়া রাবি ছাত্রলীগ, রক্ষা পাচ্ছেন না শিক্ষকরাও
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় মারধর করে ওই শিক্ষার্থীকে ‘শিবির ট্যাগ’ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ওইদিন (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাবির শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কৃষ্ণ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন, সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান।
জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৮৩ নম্বর রুমে থাকেন কৃষ্ণ রায়। গত রোববার রাতে তার কক্ষে আসেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের ৭-৮ জন অনুসারী। এ সময় তাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন ছাত্রলীগের নেতারা। কিন্তু কৃষ্ণ বের হতে রাজি না হলে তার বিছানাপত্র ফেলে দিয়ে আরেকজনকে তুলে দেওয়া হয়। এরপর হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের কক্ষে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘আমি রাতে পড়ালেখা করছিলাম। হঠাৎ তারা কক্ষে এসে আমার বিছানাপত্র ফেলে দেন এবং বের হয়ে যেতে বলেন। আমি বের না হয়ে চেয়ারে বসে থাকি। এসময় সোলাইমান নামের এক ছাত্রলীগ নেতা আমাকে মারধর করেন।’
আরও পড়ুন: রাবিতে নির্যাতনের পর ‘শিবির ট্যাগ’ দিয়ে হিন্দু ছাত্রকে হত্যার হুমকি
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘পরে আমাকে জোর করে নাঈম ইসলামের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমাকে ‘ম্যানারের’ (আচরণ) অজুহাতে কান ধরতে বলেন। কান ধরতে না চাইলে তারা আবারও আমাকে মারধর করেন। এসময় নাঈম বলে, ‘তোকে মেরে শিবির ট্যাগ দিয়ে দেব।’ কিন্তু আমি হিন্দু জানার পর বলে, ‘এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর সিট নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
গত ৩১ জানুয়ারি নিজেদের পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ না পাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভিসি কার্যালয়ে ভাঙচুরের পর শাটল ট্রেন আটকে চাবি নিয়ে গেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় শহর অভিমুখে রওনা করা শাটল অবরোধ করে সংগঠনটির নিষিদ্ধ বগিভিত্তিক উপগ্রুপ কনকর্ড অনুসারীরা। এ সময় ফতেয়াবাদ রেল স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছালে অবরোধকারীরা চাবি নিয়ে চলে যায়। এতে বিপাকে পড়েন শহরগামী হাজারো শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: পবিপ্রবিতে বিড়ি খাওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠান শেষে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান তারেকের সামনে এসে ধূমপান করেন শামীম নামের এক জুনিয়র। এসময় তারেকের এক অনুসারী এসে ধূমপান করার অপরাধে শামীমকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এরপর শামীমের সঙ্গে থাকা তার সহপাঠীদের সঙ্গে মেহেদি হাসান তারেকের অনুসারীরা বাকবিতাণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। শামীম ও তার সহপাঠীরা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগরের অনুসারী।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি রাত ১১টায় রাবির শাহ মাখদুম হলের ২১৪ নম্বর কক্ষের সামিউল ইসলাম নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে মানিব্যাগ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিলো ওই হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাজবিউল হাসান অপূর্বের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে কাউকে বললে প্রাণনাশের হুমকি দেন ওই নেতা। এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। গত ২২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে বিছানাপত্রসহ মো. জাকির হোসেন নামে এক শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দেয় অত্র হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম ও তাঁর কর্মীরা। পরে সেই সিটে আরেকজনকে তুলে দেয় মোমিন। বিষয়টি একাধিকবার হল প্রাধ্যক্ষকে জানালেও সমাধান না পেয়ে বিছানাপত্র নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয় ওই শিক্ষার্থী।
আতঙ্কের নাম ‘শিবির ট্যাগ’
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্যতনে ‘শিবির ট্যাগ’দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মারধরের আগে তাদের শিবির বলে চালিয়ে দেওয়া বা মারধরের পর তাদের শিবির আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ভাইবা দিতে এসে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন নুর হোসেন নামের এক নিয়োগপ্রার্থী। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০০৩-০৪ সেশনের ছাত্র ছিলেন। মারধরের পর ছাত্রলীগের নেতারা জানান, শিবির অভিযোগে তার ভাইবা বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চমেকের ৪ ছাত্রকে রাতভর পেটালেন ছাত্রলীগ কর্মীরা
গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ৪ শিক্ষার্থীকে কলেজ ছাত্রাবাসে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। চমেক সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে ওই দিন মধ্যরাত থেকে পরেরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ ও শারীরিক নির্যাতন করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। নির্যাতিত ৪ শিক্ষার্থী হলেন, জাহিদ হোসেন ওয়াকিল, সাকিব হোসেন, এম এ রায়হান ও মোবাশ্বের হোসেন শুভ্র। তারা সবাই এমবিবিএস ৬২ ব্যাচের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে সিএমসি সূত্র। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাহিদ ও সাকিবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় মারধর করে ওই শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ওইদিন (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাবির শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কৃষ্ণ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন, সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমান।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী নির্যাতনে বেপরোয়া রাবি ছাত্রলীগ, রক্ষা পাচ্ছেন না শিক্ষকরাও
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরে আমাকে জোর করে নাঈম ইসলামের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমাকে ‘ম্যানারের’ (আচরণ) অজুহাতে কান ধরতে বলেন। কান ধরতে না চাইলে তারা আবারও আমাকে মারধর করেন। এসময় নাঈম বলে, ‘তোকে মেরে শিবির ট্যাগ দিয়ে দেব।’ কিন্তু আমি হিন্দু জানার পর বলে, ‘এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর সিট নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
অপরাধের শাস্তি কেবল বহিস্কার
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ধরনের ৯টি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ নেতা-কর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্নকারী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এসব ঘটনায় পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে ছাত্রলীগ। অপরাধে জড়িত নেতা–কর্মীদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার যে দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন : ঢাবি-চবি-জাবিসহ বিভিন্ন ইউনিটের ২১ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করল ছাত্রলীগ
বহিস্কৃতরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সাবেক মানব সম্পদবিষয়ক উপ-সম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু, ঢাবির কবি জসিম উদদীন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তানজীর আরাফাত তুষার, ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক আসানুল্লাহ আসাদ,পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান বাধন, গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ পলক, উপ-দপ্তর সম্পাদক জিহাদুল ইসলাম, অর্থ বিষয়ক উপ-সম্পাদক আল কাওসার, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক শাওন চৌধুরী, মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সদস্য ফাহিম ভাজাওয়ার জয়,আরেক সদস্য সাজিদ আহমেদ, জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের কর্মী রাহুল রায়, ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের কর্মী মো. তারেক, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী ফজলে নাবিদ সাকিল, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী মো. রাহাত রহমান, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী সাদিক আহাম্মদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অসিত পাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সম্পাদকবশাহ আলম রাতুল, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মী নূর মোহাম্মদ নাবিল, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মী কামরান সিদ্দিক রাশেদ এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখার কর্মী রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
এর আগে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক দম্পতিকে মারধর করে স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের মামলায় অভিযুক্ত তানজির আরাফাত ওরফে তুষার ও রাহুল রায়কে গত রোববার ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি আরও তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। তারা গত ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কাভার্ড ভ্যান আটকে টাকা ছিনতাই ও চালককে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বহিষ্কৃতরা হলেন ফজলে নাভিদ ওরফে অনন, সাদিক আহাম্মদ ও মো. রাহাত রহমান৷ তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন : বইমেলায় চাঁদাবাজির ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করলো ছাত্রলীগ
এছাড়া সবশেষ বইমেলার ৪ ক্রেতা থেকে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার ঘটনায় আটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের দুই নেতা মোহাইমিনুল ইসলাম ইমন ও রাজিব হোসাইন রবিনকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। ইমন বাংলা বিভাগ এবং রবিন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্যাম্পাসগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের অপরাধের বিষয়ে সম্যখ অবগত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। এর ফলে ছোটো ছোটো অপরাধ করতে করতে একসময় বড় অপরাধে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে ছাত্রলীগের নেতারা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের উশ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকে।
যা বলছেন বিশিষ্ট নাগরিকগণ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা
নেতাকর্মীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে ছাত্রলীগকে মূখ্য ভূমিকা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, তাদের মূল দলেরও দায়িত্ব আছে এসব নিয়ন্ত্রণে। বহিস্কারের মতো লোক দেখানো নাটকে পরিস্থিতি বদলাবে না। এখানে প্রশাসনের দায়িত্ব রয়েছে। যেহেতু তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে সেজন্য দ্বণ্ডবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন : নেতা আসে নেতা যায়— খবরের শিরোনাম পাল্টায় না ছাত্রলীগের
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশি কবির বলেন, যেকোনো সংগঠনে জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ। জবাবদিহিতা না থাকলে এমন অরাজকতা হয়। এর ফলে অপরাদীরা মনে করে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। তারা নির্দিষ্ট কোনো দলের নাম এভাবে গুণ্ডামি করতে থাকলে তা ওই দলের জন্য, শিক্ষাঙ্গনের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। তাদের এমন বেপরোয়া আচরণে আইনশৃঙ্খলা বা আইনের শাসন বলে কিছু থাকছে না।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগে নীতিমালা-শৃঙ্খলা থাকা উচিৎ। ইলেকশনের আগে এধরনের অরাজকতা করতে থাকলে আওয়ামীলীগের প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাবে। এটা তাদের জন্যই ক্ষতির কারণ হবে। কাজেই ছাত্রলীগকে দলীয়ভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দলে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, প্রশাসন (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন-পুলিশ প্রশাসন) যদি তাদের প্রতিরোধ না করে পৃষ্ঠপোষকতা করে তাহলে অপরাধ কমবে কিভাবে? অনেক ক্ষেত্রে আমরা শুনে থাকি, অপরাধিরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে প্রশ্রয় পায়। এমনটা হতে থাকলে শিক্ষাঙ্গন থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে?
আরও পড়ুন : ছাত্রলীগ শিক্ষার্থী নির্যাতনে বিশ্বাস করে না: শেখ ইনান
এসব বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে সাংগঠনিক নির্দেশনা রয়েছে, সকলকে এই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। কেউ শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডে জড়ালে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে যাদের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডের প্রমাণ পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। যে বা যারাই এধরনের কর্মকান্ডে জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধেই কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।