চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে হয়রানি ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার
চাঁদা দাবি করার পর যেতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রথমে ফোনে হুমকি-ধমকি দেওয়া ও পরে লোক পাঠিয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ করেছেন এক পানি ব্যবসায়ী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান ওরফে সোহাগের বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ এসেছে।
ওই পানি ব্যবসায়ী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদার একজন নেতা। তিনি রাজধানীর বঙ্গবাজারে তার ব্যবসা পরিচালনা করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানিয়েছেন, ফোন করে চাঁদার জন্য তাঁকে গত ৩০ জানুয়ারি তলব করেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল। হলে যেতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে হুমকি-ধমকি এবং এরপর ৩১ জানুয়ারি অনুসারীদের পাঠিয়ে পানির বোতল ভাঙচুর করিয়েছেন তিনি। ইমদাদুলের আগে তার এক অনুসারী ঢাবির একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ওই ব্যবসায়ীকে মুঠোফোনে কল করেন।
ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ইমদাদুল তার নির্দেশ অনুযায়ী হলে গিয়ে দেখা না করায় তার পাঁচ-ছয়জন অনুসারীকে পাঠিয়ে বঙ্গবাজারের গোল্ডেন প্লাজার সামনে রাখা পানির বোতল ভাঙচুর করান গত ৩১ জানুয়ারি রাতে। সেখানে নেতৃত্ব দেওয়া একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি ও এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে চিনতে পেরেছেন তিনি।
চাঁদা দাবি ও ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল হাসানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
আর এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন অমর একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ ইসতিয়াক মঈন সৈয়দ।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের মার্চে ঢাবির একুশে হলসংলগ্ন আনন্দবাজারের ব্যবসায়ী-নেতাদের ডেকে নিয়ে এককালীন ১০ লাখ ও প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন তৎকালীন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এনায়েত এইচ মনন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান। তার চাঁদা দিতে ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকির পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকিও দেন। এনায়েত ও ইমদাদুল তখন চাঁদা না দেওয়ায় বাজারের সাতটি দোকান বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেসময় ১০ দিনের বেশি সময় দোকানগুলো বন্ধ ছিল।
আনন্দবাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বণিক সমিতির পক্ষ থেকে অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এতেও সন্তুষ্ট নন তারা। আরও চাঁদার জন্য বিভিন্ন সময়ে হলে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধর ও অপদস্থের পাশাপাশি চাঁদা না দিলে প্রায়ই দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতাদের অনেকে বাজারের খাবারের দোকানে খেয়ে আংশিক টাকা বা পুরো টাকাই না দিয়ে চলে যান।