শেকৃবিতে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বেধড়ক মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতা
ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সম্মেলন শেষে খাওয়া-দাওয়ায় বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির জেড়ে আহত হয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আল-ইমরান। সম্মেলন শেষে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) প্রধান ফটক বন্ধ রেখে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের নেতা কর্মীরা খাওয়া দাওয়া করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের সাংগঠনিক সম্পাদক আল-ইমরান বাধা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ১৩ ডিসেম্বর প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত প্রধান ফটকে বহিরাগত রাজনৈতিক সংগঠনের দলীয় কর্মীদের চেয়ার পেতে খাওয়া-দাওয়া এবং যত্রতত্র গাড়ি, মোটরবাইক রাখার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার সদস্য বাক-বিতন্ডায় জড়ালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা দিতে গেলে এ মারামারির ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন: ডিবি
এক ভিডিওতে মোটরসাইকেলে বসা ছাত্রলীগ নেতা আল ইমরানকে বহিরাগত বেশ কয়েকজন মিলে উপর্যুপরি চড় এবং কিল-ঘুষি মারতে দেখা যায়। সেখানে সিকিউরিটি গার্ড ও কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়ে বাধা দিলেও তারা মারধর চালিয়ে যায় এবং একপর্যায়ে আল ইমরান সেখান থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা) মো. জাবের আলী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক সবসময় তালা দেওয়া থাকে না। দুপুরে হঠাৎ রাজনৈতিক প্রোগ্রামের কথা বলে ৩০ থেকে ৪০ টা মোটরসাইকেল আরোহী কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ডদের হুমকি ধামকি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে এবং মোটরসাইকেল গুলো প্রধান ফটক সংলগ্ন শেখ কামাল ভবনের সামনে পার্কিং করে। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান করবে জানতে পারলে আমি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম। তালা দেওয়ার পর তারা তাদের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানে থাকা চেয়ার গেটের সামনেই বসিয়ে খাওয়া-দাওয়া শুরু করে।
ছাত্রলীগ নেতা আল ইমরানকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, সেসময় আমাদের ছাত্ররা সেখানে গিয়ে বাধা দিলে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি, তবে সেসময় আমি সশরীরে উপস্থিত ছিলাম না।
এবিষয়ে ইমরানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা না বলে বক্তব্য দিতে পারব না। পরবর্তীতে পুনরায় ফোন কলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততা (প্রোগ্রাম) দেখিয়ে ফোন রেখে দেন।
শেরেবাংলা হল শাখার সাধারণ সম্পাদক রিফাত শেখ বলেন, বহিরাগতদের হাতাহাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের তদন্ত করে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা যুবলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী ছিল এবং এবিষয়ে থানায় একটা জিডি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কোন পদক্ষেপ নিবে কিনা এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি-সেক্রেটারী থেকে কোন প্রকার নির্দেশনা আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যেহেতু ঘটনা ঘটেছে, আমরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। আশা করি তারা ব্যবস্থা নিবে। তারা ব্যাবস্থা না নিলে পরবর্তীতে আমরা ব্যবস্থা নিব।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শেকৃবি প্রক্টর ড. মো. হারুন-উর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বিষয়টি আমিও জেনেছি। তৎক্ষণাৎ গেট বন্ধ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) শেরেবাংলানগরস্থ পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।