ছাত্রলীগ সম্পাদককে টেনেহিঁচড়ে বের করে পেটালেন কর্মীরা
কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের একটি বাড়ি থেকে জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জকে ধরে নিয়ে এসে গণপিটুনি দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গণপিটুনি দেওয়ার সময় চ্যালেঞ্জের জামা ছিড়ে ফেলা হয় এবং পুলিশের সামনেই তাকে জুতাপেটা করা হয়। হাফিজের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়েছে। তিনি ঘটনার বিচার চান।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইকবাল হাসান বলেন, তার কপালের কয়েক জায়গায় কেটে গেছে। মাথায়ও আঘাত পেয়েছেন। শরীরে অসংখ্য জায়গায় মারধরের চিহ্ন আছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর শেখ হাফিজ সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। হাফিজের বলেন, দুপুরে তিনি শহরের পিটিআই সড়কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির সামনে তাঁর খালার ভাড়া বাসায় যান। চারতলা ভবনের তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে তাঁর খালা ভাড়া থাকেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের ৩০-৩৫ জন নেতা-কর্মী ওই বাসার নিচে জড়ো হন। তারা নিচ থেকে তাঁকে চিৎকার করে ডাকতে থাকেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের আগের দিন আ.লীগের সমাবেশের ঘোষণা
তিনি বলেন, একপর্যায়ে তাঁরা কলাপসিবল গেট ভেঙে ওপরে আসতে উদ্যত হন। তখন তিনি ওই ফ্ল্যাটের শৌচাগারের ছাদে আশ্রয় নেন। পরে তাঁরা ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে খুঁজতে থাকেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটাতে পেটাতে নিয়ে যান।
হাসপাতালে নেওয়ার সময় পুলিশের গাড়িতে থাকা অবস্থায় ফেসবুক লাইভে যান হাফিজ। তিনি বলতে থাকেন, ‘আমাকে হত্যার জন্য রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আমার প্রিয় নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের কাছে বিচার চাই। আমি ছাত্রলীগ করি। আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।’
অভিযোগের বিষয়ে হাসিব কোরাইশী বলেন, ‘তাকে (হাফিজ) সাধারণ সম্পাদক বলা যায় না। সে সন্ত্রাসী। সে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। তাকে এলাকার লোকজন মারধর করেছে।’ শেখ সজীব বলেন, ওই বাসায় তাঁকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে তাঁরা সেখানে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁকে মারধর করেছেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে চ্যালেঞ্জকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।