পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় নয়ন মিয়া (২২) নামের এক ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের মোল্লা বাড়ির সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত নয়ন উপজেলার চরশিবপুর এলাকার রহমত উল্লাহর ছেলে। তিনি উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন।
এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে (৩২), উপ-পরিদর্শক আতিউর রহমান (৩৫), আফজাল হোসেন (৩০), বিকিরণ চাকমা (৩২), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩) ও বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬)।
এদিকে, সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমান (২৫) নামে বিএনপির দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ঢাকায় আইনজীবী তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু
স্থানীয় বিএনপি নেতা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কুমিল্লায় বিএনপির গণ সমাবেশকে কেন্দ্র করে শান্তিপূর্ণ মিছিল করি। কোনো রকম উস্কানি ছাড়াই পুলিশ অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। রাত সোয়া সাতটার দিকে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলা সদর এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করছিলেন। পরে উপজেলা সদরে মোল্লা বাড়ি থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ জড়ো হয়ে বিএনপি নেতা সায়েদুজ্জামান কামালকে আটক করতে যায়। তখন এক পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের হাতাহাতি থেকে এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতাকর্মীরা তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এতে নয়ন গুলিবিদ্ধ হন।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, বিকেলে বিএনপির একশ থেকে দেড়শ নেতাকর্মী আকস্মিক মিছিল নিয়ে থানার সামনে জড়ো হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। সেখানে থাকা টহল দলের দুই কনস্টেবলের কাছ থেকে তারা অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কনস্টেবল এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। বিএনপির এক কর্মীও আহত হন।