হাসপাতালেও মারধরের শিকার ছাত্র অধিকারের নেতাকর্মীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকি হামলায় আহত হওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে পুলিশের সামনেই হামলার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণে আয়োজিত সভায় হামলার এই ঘটনা ঘটে। বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখান থেকে তাদের আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। হামলায় ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৫ নেতাকর্মীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটায় রাজু ভাস্কর্যে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে আয়োজিত স্মরণ সভায় ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের ১০-১৫ নেতাকর্মী আহত হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করায়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানেও আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হই। ছাত্রলীগ আমাদের আটকে রাখলে পুলিশ এসে ঢাবি শাখার সভাপতিসহ ১৫ জনকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্মরণসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ব্যানার-ফেস্টুনও। এতে পণ্ড হয়ে গেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের ডাকা সমাবেশ। সেখানে হামলায় আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হাসপাতালে হামলা পুলিশের উপস্থিতিতেই হয়েছে।
হামলার বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বলেন, বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বহিরাগতরা অবস্থান নেয়। প্রক্টরিয়াল টিম তাদের অবস্থানের কথা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা এসে বহিরাগতদের পরিচয় জানতে চাইলে জানা যায় তাদের কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না।
তিনি বলেন, প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আমাদের সঙ্গে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে প্রক্টরিয়াল টিম তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা একটা উশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা সাধরণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করে।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আবরার ফাহাদকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।