রিভা তো ফেরেশতা না, মানুষ ভুল করতেই পারে: তিলোত্তমা
রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার এক ছাত্রীকে হুমকি দেয়ার অডিও ফাঁস হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদার রিভাকে সমর্থন করে বলেন, ‘সেই কল রেকর্ডের জন্য রিভা সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং ওই মেয়ের কাছেও ক্ষমা চেয়েছে। রিভা তো মানুষ। সে তো আর ফেরেশতা না। মানুষ তো ভুল করতেই পারে।
বৃহস্পতিবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সেই ভুক্তভোগী মেয়েও বলেছে যে রিভার সঙ্গে তার আর কোনো সমস্যা নেই। সেই ভুল বোঝাবুঝির মীমাংসা হয়ে গেছে।’
বেশ কদিন ধরেই আলোচনায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ। এ নিয়ে সর্বশেষ ছাত্রলীগের কলেজ কমিটি স্থগিত এবং এক পক্ষের ১২ জন পদধারী ও চার কর্মীকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত ও ১৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা বলছেন, তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রোষানলের শিকার।
অভিযোগগুলোর বিষয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান কী জানতে চাইলে তিলোত্তমা বলেন, ‘সে জন্যই আমরা তাদের কমিটি স্থগিত রেখেছি। অধিকতর তদন্ত করা হবে। কিন্তু এখন ইডেনে তো তদন্ত করার পরিবেশই নেই। অধিকতর তদন্ত করে আমরা সেটি জানাব।’
তিলোত্তমা বলেন, ‘সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের শান্তিপূর্ণ প্রেস কনফারেন্সে তারা অতর্কিত হামলা করেছে। এটি চারটি চ্যানেলে লাইভ প্রচারিত হয়েছে। এরপর আমরা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপদপ্তর সম্পাদক সবার উপস্থিতিতে ভিডিও দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং কমিটি স্থগিত রেখেছি অধিকতর তদন্ত করার জন্য।’
অডিওর ব্যাপারটি মীমাংসা হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
তিলোত্তমা বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে চারটা চ্যানেলের লাইভে সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে চেয়ার দিয়ে মারা, লাঞ্ছিত করা, চুল টেনে শুইয়ে ফেলা এবং পাড়া দেওয়া এবং তাদের সঙ্গে যেসব সহসভাপতি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল তাদের লাঞ্ছিত করা এবং মাননীয় নেত্রীর ছবিযুক্ত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং সেগুলো পাড়া দেওয়া এগুলো আমাদের দলীয় ক্ষেত্রে অনেক বড় অপরাধ।
‘আর এই অপরাধের কারণে দল থেকে আমরা তাদের বহিষ্কার করেছি। ছাত্রলীগকে যারা বিতর্কিত করতে চায় তাদের ছাত্রলীগে থাকার কোনো দরকার নেই।’
আরও পড়ুন: কুবি ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে রাতভর নাটক
‘কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে, আমাদের কথা না শুনে কেন বহিষ্কার করা হয়েছে’ বহিষ্কৃতদের এমন প্রশ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিলোত্তমা বলেন, ‘তারা কি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে নাকি তাদের কোনো দিন ডেকে পাওয়া গেছে! তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমরা এই ঘটনার আগে দুইদিন ৬ ঘণ্টা করে ইডেনে গিয়ে বসে ছিলাম। তারা আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি, কোনো কো-অপারেটিভ আচরণ করেনি এবং কোনো অভিযোগ জানাতেও আমাদের কাছে আসেনি।’
ইডেনের ঘটনায় ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্য ছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশি। পরে অবশ্য কমিটি নিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ আপত্তি জানালে তিনি কমিটি থেকে সরে আসেন।
কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে স্থায়ী বহিষ্কার কেন জানতে চাইলে নিশি বলেন, ‘সেই ঘটনার তদন্ত করে আমরা কিছু তথ্য উপাত্ত ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছে দিয়েছি। আর উনাদের কাছেও হয়ত কিছু তথ্য ছিল। এসব তথ্য এবং অভিযোগগুলো যদি প্রমাণিত সত্য হয় তাহলে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক শোকজ না করে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে পারে।’