ছেলেরা অধ্যাপক-প্রকৌশলী, ৬৭ বছরে এসএসসি দিচ্ছেন বাবা
৬৭ বছর বয়সে এসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তি। এসএসসি পাস না করেও তিনি লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, ছড়া, উপন্যাস ও গান। এবার কিশোর বয়সের ছেলে-মেয়েদের সাথে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন তিনি। তার বড় ছেলে অধ্যাপক। মেজো ছেলে কামিল পাস আর ছোট ছেলে প্রকৌশলী।
আবুল কালাম আজাদ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ মন্ডলের ছেলে। পারিবারিক জীবনে তার তিন ছেলে। গত শুক্রবার বাংলাদেশ উন্মক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি (১ম ও ২য় বর্ষ পরীক্ষা-২০২২) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি।
আবুল কালাম আজাদ জানান, তার বয়স প্রায় ৬৭ বছর। তার ছেলেরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে। তিনি এই আলোকিত হতে চান। তাছাড়া ছোট থেকেই তিনি কবিতা, ছড়া, গান ও উপ্যনাস লিখে আসছেন। ইতিমধ্যে তার লেখা ‘দেহদাহ’ ও ‘দেশরত্ন’ নামে দুটি কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। এতেও প্রশংসিত হয়ে উঠেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবিতার বই লিখেছি। দেশের উন্নয়ন নিয়ে আমার লেখা আরেকটি বই ছাপাখানায় দিয়েছি। আমি চাই, আমার একটা বই যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখেন।’
আরও পড়ুন: এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ
তার মেজো ছেলে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কামিল পাস করেছি। আমার বড় ভাই প্রফেসর। একটি কলেজে চাকরি করছেন। আমার ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছে। আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই শিক্ষিত। বাবাও অনেক দিন থেকে বলছেন এসএসসি পরীক্ষা দেবেন। তাই আমরা তাকে সহযোগিতা করছি।
খড়িয়াকাজীরচর ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও দেশের উন্নয়ন নিয়ে লেখা কবিতার বই প্রকাশ করে এলাকায় প্রশংসিত হচ্ছেন আবুল কালাম আজাদ। গ্রামে তিনি কবি কালাম নামে অধিক পরিচিত। আবুল কালাম আজাদ এই বয়সে এসে ধৈর্যের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন এ কারণে আমরা খুশি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আলম তালুকদার বলেন, তিনি উন্মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। কিশোর বয়সের শিক্ষার্থীদের সাথে পরীক্ষা দেওয়ায় তিনি আলোচনায় এসেছেন। তার লেখার মধ্যে কোনো জড়তা নেই। তিনি সবাইকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই।