বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন জিহাদের, ইচ্ছা মানুষের সেবা করা
শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ছিলেন সবার হাসির পাত্র। এখনও বিভিন্ন সময়ে সমালোচনার শিকার হতে হয় তাকে। তবে সংকোচ ও প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগে। অদম্য এই শিক্ষার্থীর নাম জিহাদ হাসান। রবিবার (১৩ মার্চ) জিহাদ হাসানের ভর্তি কার্যক্রম শেষে কথা হয় তার সঙ্গে।
জিহাদ পটুয়াখালি জেলার দুমকি থানার পাঙ্গাসিয়া গ্রামের ফারুক হাসান গাজীর ছেলে। জিহাদ উচ্চতায় মাত্র ৩৬ ইঞ্চি। তিনি রাজধানীর মুসলিম মডার্ন একাডেমি থেকে জিপিএ ৪.৬৭ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছেন এবং বনফুল আদিবাসী ক্যাডেট কলেজ থেকে জিপিএ ৪.২৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেছেন। এরপর ভর্তি যুদ্ধেও উত্তীর্ণ হন।
জিহাদ বলেন, ছোটবেলা থেকে অনেকের হাসির পাত্র ছিলাম। এখনো হতে হচ্ছে। ছোটবেলায় সংকোচ হলেও এখন সেটা হয় না। আমি সমালোচনায় কান না দিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়াশুনা করেছি। জীবনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলাম। আল্লাহর রহমত আর পিতা-মাতার সহযোগীতায় সেটা সম্ভব হয়েছে।
‘‘আমার পিতা সবসময় পাশে ছিলেন। তবে আম্মার অবদান বেশি। আমার মা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। সর্বশেষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছি’’।
আরও পড়ুন: ১০০-তে নম্বর ২.৫, চান্স হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে
এর আগে জিহাদ গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে সেখানের ভর্তি বাতিল করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের ভর্তি সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ভর্তি হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে জিহাদ হাসান বলেন, ‘আমার অনুভূতি আকাশ ছোঁয়া। আমি কখনো ভাবিনি এরকম একটা ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব। ভর্তি হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আমার স্বপ্ন বিসিএস ক্যাডার হওয়া এবং মানুষের সেবা করা।’
জিহাদের মা রেহানা আক্তার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে বিভিন্ন মানুষ নানা কথা বলেছে। এসব কথা শুনে অনেক সময় কষ্ট লেগেছে। তবে ওর চেষ্টা ও আগ্রহ দেখে আমি ওর সপ্নপূরণে সহযোগীতা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি ওর লাইফটা একটু সামনের দিকে আগায় দিতে। যাতে আমার মৃত্যুর পরে কিছু করে খেতে পারে।’