ঢাবি ছাত্র আরাফাতের ঈদ উপহার পেল শত পরিবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিকভাবে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তায় অনন্য এক উদ্যোগ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সেভ দ্য টুমরো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত চৌধুরী।
হাঁসি ফোটাবই- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য ‘ভালবাসার ঈদ উপহার’ নামে এই অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। ইতোমধ্যে তার এই গৃহীত উদ্যোগ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মাঝে। তার এই উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক ছাত্র সংগঠন ও ছাত্রনেতা শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নাম ও পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে তাদের পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা ও নাজুকতা, শারীরিক অসুস্থতা এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যার উপর ভিত্তি করে নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার এই মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি।
যে সকল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যা একটু বেশি প্রকট তাদের প্রতি জনকে ৪ হাজার টাকা, যাদের তুলনামূলক কিছুটা কম সমস্যা তাদের ২০০০ টাকা ও বাকিদের ১৫০০ টাকা করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভালবাসার ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।
এই পর্যন্ত তার উদ্যোগের ‘ভালবাসার ঈদ উপহার’ হিসেবে আর্থিক সহায়তা পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮ শিক্ষার্থীর পরিবার। করোনাকালীন এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আরাফাত চৌধুরীর এই ঈদ উপহার ঢাবি শিক্ষার্থীদের পরিবারের ঈদের আনন্দের মাত্রাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে।
এক উপহারভোগী জানান, আরাফাত ভাইয়ের এই উপহারের কারণে আজ আমাদের পরিবারের সবার মুখে হাঁসি ফুটেছে, পরিবার নিয়ে এখন ভালো ভাবে ঈদ করতে পারবো। আমার পরিবারের এই দুর্দিনে তিনি আমাদের আশার আলো দেখিয়েছেন।
কেন এমন উদ্যোগ নিয়েছেন, জনতে চাইলে আরাফাত চৌধুরী বলেন, ঈদ মানে শুধু নিজে ভাল থাকা নয়,বরং সবাইকে নিয়ে ভাল থাকাতেই ঈদের প্রকৃত আনন্দ। আমি নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি কিছু পরিবারের মুখে হাঁসি ফোটাতে, ঈদের আনন্দটুকু তাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে। সবাই মিলে ভালো থাকাটাই সার্থকতা।
বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে বিভিন্ন মহৎ ও শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা আড়ালে থেকে নীরবে-নিভৃতে কাজ করে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মেধাবী ছাত্র আরাফাত চৌধুরী। তার মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রম ও উদ্যোগগুলো শিক্ষার্থী মহলের সবার কাছেই বহুল প্রশংসিত। বিভিন্ন সময়ে তার শিক্ষার্থী বান্ধব উদ্যোগ গ্রহণের কারণে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আস্থার এক মূর্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, আমার মাকে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। আরাফাত ভাইয়ের কাছে জানালে তিনি আমার মায়ের চিকিৎসার সমস্ত অর্থের ব্যবস্থা করে দেন। এমনকি পিজি হাসপাতালে যখন অপারেশনের জন্য ৬ মাস চেষ্টা করেও ডেট পাচ্ছিলাম না সেই মুহূর্তে তিনি ১ সপ্তাহের মাঝে আমার মায়ের অপারেশনের ব্যবস্হা করে দিয়ে আমার মায়ের জীবন বাঁচান। আমার পরিবারের সবাই তার কাছে কৃতজ্ঞ।
করোনা মহামারীর দুর্যোগময় সময়ে যখন সবাই ব্যক্তি স্বার্থ ও প্রয়োজনের মেটাতে মরিয়া, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এই শিক্ষার্থী নিজের কথা না ভেবে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে এক মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।