চারিদিকে পানি কিন্তু খাওয়ার পানি নেই
ব্রিটিশ কবি স্যামুয়েল টেইলর কোলেরিজ তার ‘দ্য রাইম অব দ্য এনশিয়েন্ট ম্যারিয়ার’ কবিতায় লিখেছেন, ‘ওয়াটার ওয়াটার এভরিহোয়ার, বাট নর এ্যানি ড্রপ টু ড্রিংক’- অর্থ্যাৎ, চারিদিকে পানি কিন্তু খাওয়ার উপযোগী কোন পানি নেই।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনিতে এ সংকট তীব্রতর। সুন্দরবন ঘেঁষা এই জনপদে জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিশাল বিশাল নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাধার। কিন্তু, লবণাক্তার কারণে এসব উৎসের পানি পানযোগ্য নয়। সুপেয় পানির অভাবে লবণাক্ত পানি পানের কারণে উপকূলীয় জনপদ দীর্ঘ মেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ এর সাতক্ষীরা ইউনিট আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ওয়েবিনারটিতে সাতক্ষীরা জেলার সকল প্রান্তের তরুণরা অংশগ্রহণ করেন এবং নিজ নিজ এলাকার সমস্যা তুলে ধরেন। সমগ্র ওয়েবিনারটি ‘ইয়ুথনেট’ এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
সংগঠনটির সাতক্ষীরা ইউনিটের সমন্বয়ক এসএম শাহিন আলমের সভাপতিত্বে ও কার্যকরী সদস্য শেখ শাকিল হোসেনের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন ‘ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ এর প্রধান সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, প্রভাষক ইদ্রিস আলী, মো. হাফিজ, শিরীন সীমা, আরিফুল ইসলাম, শেখ শরীফ হাসান, সাব্বির আহমেদ, মাসুম বিল্লাহ, মোমিনুর রহমান, শাহারিয়া সুলতানা, রাইসুল ইসলাম, আরাফাত হোসেন, মাসুদ রানা, মো. তরিকুল ইসলাম, বাদশা ওয়ালিদ, শেখ হাবিবুর রহমান, আলামিন হোসেন, মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।
বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত কারণে আগামী দিনে এই অঞ্চলে দুর্যোগ আরও তীব্রতা নিয়ে এবং ঘন ঘন আঘাত হানবে। তার লক্ষণ ইতোমধ্যে আমরা টের পাচ্ছি। প্রাকৃতিক এবং মনুষ্য সৃষ্ট কারণের যৌথ অভিঘাতে পানি সংকট এই অঞ্চলে নানা রূপে দেখা দেবে। লবণাক্ততা বৃদ্ধি, সাগরতলের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে জোয়ারের তীব্রতা ও উচ্চতা বৃদ্ধি, ভূ-গর্ভস্থ জলে আর্সেনিক দূষণ, জলবদ্ধতা, মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি, জল ও মাটির দূষণ ইত্যাদি ক্রমেই এই অঞ্চলকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলবে। সেজন্য এই অঞ্চলের সব উন্নয়ন পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সংক্রান্ত উপাত্তসমূহ বিবেচনায় নেওয়া খুবই জরুরি।