প্রথা ভেঙ্গে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায় ৫ শতাধিক ছাত্রী
স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায় উত্যক্তের শিকার হন। এছাড়া সমাজের প্রচলিত কুসংস্কার তো আছেই। তবে এর কোন কিছুই দমাতে পারেনি তাদের। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে নিয়মিত স্কুলে যায় তারা। আর স্কুলে যাওয়া-আসার জন্য ব্যবহার করেন সাইকেল।
এটি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া চরটেককি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ঘটনা। এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচশতাধিক ছাত্রী সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়। রাস্তা-ঘাটের দুর্দশা আর উত্যক্তের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন দুই চাকার এই যানবাহনকে।
জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের পাকুন্দিয়া উপজেলার মেয়েরা প্রয়োজনের তাগিদেই শুরু করেন সাইকেল চালানো। অথচ নিজেদের অজান্তেই এখন তারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন পুরনো চিন্তা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের।
মেয়েদের এ লড়াই-সংগ্রামের আড়াল থেকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিয়ে চলছে চরটেকি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। শুধু মেয়েদের সাহসী করা নয়, লেখাপড়াতেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে প্রত্যন্ত গ্রামের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।গত নয় বছরে উপজেলা পর্যায়ে একাধিকবার প্রথম স্থান অর্জন। সবশেষ স্কুলটি ২০০৭ সালে সমগ্র জেলার মধ্যে প্রথম হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল হক জানান, শীত-বর্ষা সবসময় ছাত্রীদের উপস্থিতির হার ৯৭ শতাংশের ওপরে থাকে। বিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক ছাত্রী দেশের বিভিন্ন মেডিকেল, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ বলেন, “সাইকেল স্কুল খ্যাত স্কুলটি সরেজমিন আজ দেখলাম। দেখে অনেক ভালো লাগলো। এ বিদ্যালয়ের মেয়েরা শুধু যে ভালো ফলাফল করছে এমন নয়, তারা দূর দূরান্ত থেকে সাইকেল চালিয়ে এসে সমাজে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে।”