অর্থাভাবে প্রতিবন্ধী পপির পড়ালেখা বন্ধের পথে
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে অর্থাভাবে প্রতিবন্ধী পপী আক্তারের পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। পপি আক্তার (১৪) উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের কান্দূলী গ্রামের দিন মজুর মো. জয়নাল আবেদীনের কন্যা। পপি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। দু’হাত ও দু’পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। তিন ভাই-বোনের মধ্যে পপি আক্তার দ্বিতীয়। পিতা জয়নাল আবেদীন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। পপি’র ছোট বোন তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। পপি’র মা নাজমা খাতুন অন্যের বাড়ীতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে যা আয় হয় তাই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার।
জানা যায়, পপি জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী। স্কুল পড়ুয়া প্রতিবন্ধী পপি ও তার পরিবারের অভাব-অনটন ও দৈন্যদশার ঘটনার বিষয় নিয়ে ২০১৬ সালের শেষ দিকে সংবাদ পত্রে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সে সময় পপি পার্শবতী শ্রীবরদী উপজেলার ভটপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। এ সময় অর্থাভাবে পপি’র পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রমের প্রতিবেদনটি দৃষ্টিগোচর হয় শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস আলমের। তিনি পপি’র পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ ও পরিবারের দৈন্যদশা দেখে তার পড়ালেখার ব্যয়ভার তুলে নেয়। এস আলমের দেয়া অর্থে, অনায়াসে নবম শ্রেণী থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে পপি। এসএসসিতে ৫ বিষয়ে এ প্লাসসহ ফলাফল ভালো করলেও গণিত ও অর্থনীতি এ দুই বিষয়ে সে অকৃতকার্য হয় পপি। ইতিমধ্যেই (ওসি) এস আলম বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেলে পড়ালেখার খরচ নিয়ে আবারও দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে পপি। ২০১৯ সালে ওই দুই বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্যে ধার-দেনা করে ফরম ফিলাপ করেছে সে। কিন্তু অর্থাভাবে প্রাইভেটও পড়তে পারছে না।
ভটপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা ইয়াসমিন লাকী বলেন, পপি পড়ালেখায় একজন ভালো ছাত্রী। পপি জানায়, পড়ালেখার প্রতি তার খুব আগ্রহ। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অভাব-অনটন ও নানাবিধ দৈন্যদশার কারণে এসএসসি পাশের পর তার হয়তো আর পড়ালেখা করা সম্ভব হবে না। তবে আর্থিক সহায়তা পেলে সে পড়ালেখা চালিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে পপি।