০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:১২

চার বিবেচনায় ভোট দেবেন তরুণরা

দুই দলেরই টার্গেট নতুন ভোটার  © প্রতীকী ছবি

তরুণরাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে— এমন ভবিষ্যদ্বানী দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কসহ কয়েকটি আন্দোলনের পর সম্প্রতি তাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বলা হচ্ছে, ওইসব আন্দোলন থেকে উঠে আসা দাবির পাশাপাশি আরো কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতেই নতুন মেয়াদের সরকার নির্ধারণ করবেন এক-তৃতীয়াংশ তরুণ ভোটার; যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বিশ্লেষকরাও বলছেন, বিশাল সংখ্যক এই ভোটার সহজেই নির্বাচনের ফল আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি— যে কারো দিকে নিয়ে যেতে পারে।

কিন্তু কোন মানদণ্ডে ভোট দেবেন তরুণরা? সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বদলে যাওয়া বিশ্বের বাসিন্দা তরুণরা। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তারা এমন কিছু প্রত্যাশা করে; যেটা শুধু তাদেরকেই নয়, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকেও পাল্টে দেবে। তারা চায়, গণতান্ত্রিক পরিমণ্ডলে অফলাইন-অনলাইনসহ সর্বত্র বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করতে; সে সুযোগ তাদের দিতে হবে। পাশাপাশি বেকারত্ব দূর করে মেধার ভিত্তিতে কর্মে নিয়োগ-পদোন্নতির নিশ্চয়তা ও তুলনামূলক সৎ, যোগ্য প্রার্থীতা তাদের (তরুণ) ভোটের ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করবে। বিশ্লেষকরা এও বলছেন, যদিও যুব সমাজের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু তাদের চিন্তা-চেতনা আলাদা এবং সবার চাহিদা অভিন্ন। তাদের চাওয়া— তারুণ্যবান্ধব ‘নিউ থট’, মানসম্মত কর্মসংস্থান, কথা বলার স্বাধীনতা তথা সুশাসন এবং ক্লিন ইমেজের প্রার্থী চায়। এসব বিষয়ই একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করবে তরুণদের কাছে।

একই ধরণের মত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানও। তিনি মনে করেন, তরুণরাই বাংলাদেশ, আগামীর ভবিষ্যৎ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যেসব মানুষ করেছেন, তাদের অধিকাংশই ছিল তরুণ। শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৬০ ভাগের বেশি মানুষ ছিলেন তরুণ। আগামী নির্বাচনেও তারা জয়ের নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। তিনি জানান, গণজাগরণ মঞ্চ, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কিংবা কোটা সংস্কার- সব আন্দোলনের সাক্ষী আজকের তরুণরা। এসব আন্দোলনের অধিকাংশ দাবি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পূরণ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, কোটা বাতিল হয়েছে এবং নিরাপদ সড়কেরও অনেক দাবি আদায় হয়েছে। আবার ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের চলমান প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে তরুণরা। তারপরও হয়ত কিছু দাবি থেকে যায়। সে ব্যাপারে বর্তমান সরকার আন্তরিক। আমার বিশ্বাস- এসব বিষয় মাথায় রেখেই তরুণরা নতুন সরকার গঠন করবে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, আগামী নির্বাচনসহ জাতীয় ইস্যুতে যুব সমাজের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা চায়, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সঙ্গে আলোচনা করুক। নাগরিকরা সঠিকভাবে ভোট দিতে পারুক।

প্রবীণরা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, কিন্তু অ্যাডভান্স তরুণরা। এ কারণেই তাদের ভোটা টানা কঠিন

 

তারুণরা ফ্যাক্ট; প্রমাণিত বিগত নির্বাচনেও

তরুণদের ভোট কেন ফ্যাক্ট? ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উভয় দলের ইশতেহার বিশ্লেষণ সেই তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, ওই নির্বাচনে তরুণদের জন্য বিএনপির ইশতেহারে বলা হয়— তারা দেশ ও জনগণের সামগ্রিক কল্যাণ ও উন্নতি নিশ্চিত করতে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ শ্লোগান ধারণ করে নিরলসভাবে কাজ করবেন। ৩৩ দফার ওই ইশতেহারে বেকার যুবশক্তিকে দেশে উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডে এবং বিদেশে কর্মসংস্থানে সক্ষম করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, ঋণ-সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়। এছাড়া তরুণদের জন্য আরো কয়েকটি বিষয় উল্লেখ থাকলেও আকৃষ্ট করার মত কোনো প্রতিশ্রুতি সেখানে ছিল না।

অন্যদিকে একই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ছিল দিনবদলের সনদ; যাতে বলা হয়— দেশের প্রতিভাবান তরুণ ও আগ্রহী উদ্যোক্তাদের সর্বোতভাবে সহায়তা দিয়ে সফটওয়্যার শিল্প ও আইটি সার্ভিসের বিকাশ সাধন করা হবে। এতে রপ্তানি বাড়বে এবং ব্যাপক কর্মসংসস্থানের ব্যবস্থা হবে। ২০২১ সালের লক্ষ্য হলো, ডিজিটাল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকার করা হয়। ওই সময় তরুণরা আওয়ামী লীগের অঙ্গীকারে আস্থা রেখে নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলে বলছেন বিশ্লেষকরা।

বিগত ভোটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক সর্বশেষ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ওই নির্বাচনে দুটি প্রধান দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন আজকের প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা; আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর নেতৃত্বে ছিলেন খালেদা জিয়া। তথ্যে দেখা যায়, নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছিল মোট ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫১ ভোট; যা মোট ভোটের ৪৯ ভাগ। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছিল ২ কোটি ২৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩৬ ভোট; যা মোট ভোটের ৩৩ দশমিক ২ ভাগ। সবার অংশগ্রহণে আয়োজিত ওই নির্বাচন শেষে বিশেষজ্ঞসহ সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছিলেন, তরুণ ভোটাররাই আওয়ামী লীগের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।

নির্বাচন কমিশনে থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ১৬৭ জন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে নবম সংসদ নির্বাচনের সময় দেশে মোট ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার। নবম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত গত ১০ বছরে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২৫ লাখের মতো ভোটার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তালিকায়। এ সময় ভোটার বেড়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭৮ জন। যাদের মধ্যে ১ কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার ২১৪ ভোটার প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মত, দিনবদলের সনদের কারণেই নবম সংসদ নির্বাচনে জয় পায় আ.লীগ

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ১০ বছরে যোগ হওয়া ২ লাখ ৩০ হাজার ভোটারই তরুণ হিসেবে বিবেচিত। তারাই আসন্ন নির্বাচনে বড় ভূমিকা পালন করবেন। স্পষ্ট করলে উল্লেখ করতে হয়— যারা যত নতুনদের ভোট টানতে পারবেন; তারাই ৩০ডিসেম্বরের পর ক্ষমতায় বসবেন।

তারুণ্যের ভোট: আমলে নিয়েছে উভয় শিবির

খোঁজ নিয়ে গেছে, বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারের নির্বাচনেও বড় দুই জোটের বিশেষ নজর তরুণদের দিকে। প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে ক্যাম্পেইন পদ্ধতিতেই পরিবর্তন এসেছে। ইতোমধ্যে রেকর্ড সংখ্যক তরুণ নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

তাদের মধ্যে- ছাত্রনেতা, সাংস্কৃতিক কর্মী, খেলোয়াড়, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ রয়েছে। উভয় জোটের নির্বাচনী ইতশেহারে তরুণদের সমস্যা, ভাবনা, আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায়ও ফেসবুক, টুইটারসহ ডিজিটাল মাধ্যমে জোর দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলার মাধ্যমে দেশের মেধাবী তরুণদের টার্গেট করে বিভিন্ন কাজ করছে। পিছিয়ে নেই বিএনপিও। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরও সক্রিয় রয়েছে বিশাল সংখ্যক সদস্যের একটি গ্রুপ। লক্ষ্য একটাই তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করা।

তরুণদের এবারের চাওয়া কী?

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে তারুণরা কী চায়— এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষিত তরুণদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’কে বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ প্রজন্মকে সুষ্ঠু ধারা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে বেড়ে উঠার সুযোগ দিতে হবে। তাদেরকে কীভাবে সুষ্ঠ ধারার রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাদের মাধ্যমে কীভাবে দেশের কল্যাণের জন্য সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা যায়— সেটা থাকবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষ করে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের বিষয়টি থাকবে। সরকারি নিয়োগে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কীভাবে মেধাবীদের সুযোগ দেয়া হয়; সেটা নিয়েও আমাদের প্রস্তাব রয়েছে।

সম্প্রতি তাদের সংগঠনটি ইশতেহার ভাবনা নামে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেছে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য। যা ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক কার্যালয়ের অফিসে পাঠানো হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের ওই ইশতেহার ভাবনায় বেকারত্ব নিরসন, চাকরিতে নিয়োগ, শিক্ষা ও গবেষণা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক এবং যুব অ্যাসেম্বলি নামে আলাদাভাবে সুস্পষ্ট ধারণা উত্থাপন করা হয়েছে।

পাঁচ দফা দাবি-দাওয়ার মধ্যে ১ম দফায় বলা হয়েছে— বেকারত্ব নিরসনে কর্মসংস্থান। এতে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো- শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মের নিশ্চয়তা প্রদান, বেকার তরুণদের সহজ শর্তে ন্যূনতম ৫ লাখ টাকার ‍ঋণ প্রদান, ঘুষ-দুর্নীতি ও রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। ২য় দফায় উল্লেখিত দাবিগুলো হলো— চাকরির নিয়োগ ব্যবস্থা। এতে রয়েছে-৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কার, চাকরির আবেদন সম্পূর্ণ ফ্রি করা, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে ও লিখিত পরীক্ষার ৯০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ নির্ধারণ করা, তথ্য যাচাইয়ের নামে হয়রানি বন্ধ করা, বেসরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন ও তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতির প্রণয়ন।

উভয় দল বলছে, তরুণদের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ, তাদের হাতে আগামীর বাংলাদেশ

 

৩য় দফায় রয়েছে— শিক্ষা ও গবেষণা। এতে বলা হয়, শিক্ষাখাতে বার্ষিক বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়া, প্রশ্নফাঁসবিরোধী সেল গঠন করা, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধে কঠোর আইন করা এবং মেধাপাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৪র্থ দফায় উল্লেখ করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক সংক্রান্ত বিষয়গুলো। এতে বলা হয়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা, আবাসনের কৃত্রিম সংকট দূর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বাজেটের ১০ শতাংশ গবেষণা খাতে বরাদ্দ দেয়া, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেতন কাঠামো তৈরি করা, মাদক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ ক্যম্পাস গড়ে তোলা। সর্বশেষ ৫ম দফায় বলা হয়— যুব অ্যাসেম্বলি আয়োজনের কথা। যুব সমাজকে গণতান্ত্রিক পরিবেশে উন্নত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার সুযোগ দিতে প্রতি বছর যুব অ্যাসেম্বলি এর আয়োজন করার উদ্যোগ নিতে বলা হয়।

আসনভিত্তিক তরুণ ভোটারের সংখ্যা কেমন?

মাত্র ২২দিন হাতে থাকায় দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজশাহীতেও চলছে ভোটের আমেজ। এই জেলায় রয়েছে ছয়টি সংসদীয় আসন; যাতে এবার যুক্ত হয়েছে প্রায় ২ লাখ নতুন ভোটার। এদের প্রায় ৯০ ভাগই তরুণ-তরুণী।  নতুন ভোটাররা বলছেন, যে দল সরকার গঠনের পর কর্মসংস্থান ও উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে তারা সে দলের প্রার্থীকেই ভোট দেবেন।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৫৬২ জন। দশম সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৭ জন। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৫ জন। নতুন পুরুষ ভোটার বেড়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯১২ জন। আর নারী ভোটার বেড়েছে ৯৭ হাজার ৯৯৩ জন। জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, নতুন ভোটারের মধ্যে ৯০ ভাগ তরুণ-তরুণী। আর বাকি ১০ ভাগ জেলার বাইরে থেকে রাজশাহীতে নতুনভাবে ভোটার হিসেবে যুক্ত হয়েছেন। তিনি জানান, নতুন ভোটারের অনেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড পাননি। তারপরও ভোটার তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তারা ভোট দিতে পারবেন।

কথা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে সদ্য পাস করা আল-আমিন হোসেনের সঙ্গে। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’কে তিনি বলেন, কর্মসংস্থান, মানসম্মত শিক্ষা, মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, বাক স্বাধীনতার অধিকার, যুববান্ধব শাসন ব্যবস্থা, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুব সমাজের অংশগ্রহণ, মুক্তবুদ্ধির চর্চা— এসবই তরুণদের চাওয়া। শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে তরুণদের জন্য যেসব প্রার্থী ভাববেন; তাদের পক্ষেই আমাদের অবস্থান থাকবে।