আগামী ঈদ পরিবারের সঙ্গে করতে পারবেন, আশা যুক্তরাজ্যে পড়তে যাওয়া তাসনিমের
জীবনের তাগিদে আর উচ্চশিক্ষার আকাঙ্ক্ষা থেকে দূর প্রবাসে পাড়ি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। পরিবারকে রেখে বিদেশের মাটিতে ঈদ নিশ্চয়ই বেদনাদায়ক। বছর ঘুরে আবার অন্যদের সঙ্গে এসব শিক্ষার্থীদের সামনেও হাজির মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
তেমন একজন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তাসনিম। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন (২০১৫-১৬)। এরপর যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ বেডফোর্ডশায়ার থেকে একাউন্টিং এন্ড বিজনেস ফাইনান্সে এমএসসি (২০২২-২৩) শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠানে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন।
উচ্চশিক্ষার জন্য আসা এই শিক্ষার্থী গত আড়াই বছর ধরে দেশের বাইরে ঈদ উদযাপন করছেন। তিনি জানান, আশা করছি, আগামী ঈদে দেশে পরিবারের সাথে উদযাপন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
বিদেশের মাটিতে ঈদ কীভাবে কাটে জানতে চাইলে তাসনিম জানান, বিদেশের মাটিতে ঈদের দিনটা সাধারণত খুব ব্যস্ততায় কাটে। সকালে ঈদের নামাজ পড়ি, তারপর প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে মিলিত হই। দিনটা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং বন্ধুদের সাথে কাটাই। যুক্তরাজ্যে ঈদুল আযহার উদযাপন কিছুটা ভিন্ন এবং চ্যালেঞ্জিং, বিশেষ করে কুরবানি করার বিষয়টি। যুক্তরাজ্যে যে কোনো জায়গায় কুরবানি করা যায় না, নির্ধারিত এবং অনুমোদিত স্লটার হাউস বা মাংস প্রক্রিয়াকরণ স্থানে কুরবানি করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর, আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিরা মিলে কুরবানির আয়োজন করি। কুরবানি দেওয়ার জন্য আগে থেকেই নির্ধারিত স্লটার হাউসে বুকিং করতে হয়। কুরবানি শেষে, মাংস ভাগ করে নেওয়া হয় এবং আত্মীয়স্বজনের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এরপর আমরা সবাই মিলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করি, যা আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার। পরিবারের সাথে ভিডিও কলে কথা বলি এবং ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। যুক্তরাজ্যে এই দিনটি প্রবাসীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে উদযাপিত হয়, যা আমাদের দেশের ঈদের উৎসবের সাথে মিল রেখে কিছুটা হলেও আনন্দ এনে দেয়।
তাসনিম বলেন, পরিবারকে রেখে বিদেশে ঈদ উদযাপন করা সত্যিই বেদনাদায়ক। পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন করলে সবসময় মনে হয় কিছু একটা অপূর্ণ থেকে গেছে। তবুও বন্ধুদের সাথে মিলে সেই শূন্যতা কিছুটা পূরণের চেষ্টা করি। পরিবারকে প্রচণ্ড মিস করি। বিশেষ করে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে না পারাটা খুব কষ্টের।
শৈশবের ঈদ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শৈশবে ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে নতুন পোশাক পরা, বন্ধুদের সাথে ঈদগাহে যাওয়া, ঈদের সালামি পাওয়া—এসব স্মৃতি এখনও মনে আছে। সবচেয়ে আনন্দদায়ক ছিল পরিবারের সাথে দুপুরে মজার মজার খাবার খাওয়া এবং সবার সাথে সময় কাটানো। সেই আনন্দময় মুহূর্তগুলো এখনও আমার মনে বিশেষ জায়গা করে আছে।