ডাক্তারি ছেড়ে জল-স্থল-কলমে সমান বিচরণ বাবর আলীর
পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। দীর্ঘবিরতিতে প্রায় ১১ বছর পর সফল হলেন এই বাংলাদেশি। রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান তিনি। তবে শুধু এভারেস্ট জয়ী হিসেবেই বাবরের পরিচয় সীমাবদ্ধ নয়। তিনি একাধারে চিকিৎসক, লেখক, পদভ্রজকারী ও সাইক্লিস্টস। সবগুলো কাজে সমানভাবে অবদান রেখে চলেছেন এ তরুণ।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বুড়িশ্চর এলাকার লেয়াকত আলী এবং লুৎফুন্নাহার বেগমের দ্বিতীয় সন্তান বাবর ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫১তম ব্যাচের ছাত্র। কিছুদিন জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করলেও একপর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। চাকরি ছেড়ে শুরু করেন দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ। সঙ্গে নানান স্বেচ্ছাসেবী কাজে যোগ দেন। করোনাকালে চিকিৎসা সেবায় ছিল এ তরুণের ভূমিকা।
বাবর ২০১৭ সালে ভারতের উত্তর কাশীতে অবস্থিত ‘নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং’ হতে বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম শীর্ষ পর্বতারোহণ ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
বাবর আলী ২০২৩ সালে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে সম্পন্ন করেছেন ভারতের দীর্ঘতম হাইওয়ে কাশ্মীর-কন্যাকুমারি (৪০০০ কিমি) সাইক্লিং। ২০২২ সালে ‘ভোমড়া-তামাবিল’, ২০২১ সালে ‘হালুয়াঘাট-কুয়াকাটা’, ২০১৭ সালে ‘টেকনাফ-তেতুলিয়া’ এবং ‘আখাউড়া-মুজিবনগর’ এই চারটি ক্রস-কান্ট্রি সাইক্লিং সম্পন্ন করেন।
তিনি ২০১৯ সালে একটানা ৬৪ দিন হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলা এবং প্রচার করেছেন সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বর্জনের বার্তা। এছাড়া তিনি দৌড়েছেন বহু ম্যারাথন ইভেন্টে। ২০২১ সালে সম্পন্ন করেছেন ‘DIWA সার্টিফাইড স্কুবা ডাইভিং’ কোর্স। ২০১৯ সালে করেছেন কাপ্তাই-রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই এবং ২০১৭ সালে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি-কাপ্তাই কায়াকিং।
লেখালেখিতেও অবদান রয়েছে বাবরের। তিনি দুইটি মৌলিক গ্রন্থ ‘পায়ে পায়ে ৬৪ জেলা’ (চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী) এবং ‘সাইকেলের সওয়ারি’ (চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী) লিখেছেন। অনুবাদ করেছেন একটি গ্রন্থ ‘ম্যালরি ও এভারেস্ট’ (অদ্রি প্রকাশনী)। এছাড়াও তিনি নিয়মিত দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য পত্রিকা ও লিটল ম্যাগাজিনের জন্য অভিযানের গল্প লিখেন।