ছাদে স্ট্রবেরি চাষ করে সাড়া ফেলেছেন কলেজছাত্র আসিফ
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। ছোটবেলা থেকেই ফুল আর ফল চাষের প্রতি আগ্রহ তার। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বাড়ির ছাদে শুরু করেছেন স্ট্রবেরির চাষ। শখের বশে স্ট্রবেরি চাষ শুরুর পর অল্প দিনের মধ্যে ব্যাপক বিস্তৃত হয়েছে তার এ বাগান। একটি স্ট্রবেরি দিয়ে চাষ শুরু করলেও এখন পুরো ছাদে জুড়ে চলছে এ চাষ। আসিফ মাহমুদ গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের চাপাদহ গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, বিষমুক্ত ফল খাওয়ার ভাবনা থেকে ২০২২ সালে বাড়ির ছাদে স্ট্রবেরি ফল চাষ শুরু করেন আসিফ। সেসময় একটি মাত্র স্ট্রবেরির চারা দিয়ে শুরু করেন তিনি। বোনের বাসা থেকে নিয়ে আসা একটি স্ট্রবেরি গাছের চারা দিয়ে বাগান গুরু করার পর প্রথমদিকে ভালো ফলন জোটেনি। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় ভালো ফলন পেলে ধীরে ধীরে উৎসাহও বাড়তে থাকে তার।
পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে বন্ধুরা যখন আড্ডায় মেতে ওঠেন, তখন এ সময়কে কাজে লাগিয়ে আসিফ তার ছাদ বাগানে স্ট্রবেরি গাছের পরিচর্যা করেন। তিনি বলেন, সহপাঠীদেরও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ছাদ অথবা বাড়ির পাশে পড়ে থাকা জমিতে ফুল ও ফল চাষ করা উচিত।
পরিবারের সদস্যরা জানান, আসিফ শখের বশে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। একটি গাছের চারা থেকে এখন ছাদে প্রায় ২ হাজার গাছের চারা হয়েছে। শুরুর দিকে তেমন সহযোগিতা করা হয়নি। এখন সময় পেলে পরিবারের সবাই বাগান পরিচর্যা করেন। মৌসুমের শুরুতে স্ট্রবেরির সাদা ফুল ফোটে। পরে হলুদ রঙের ফল ধরে। সবশেষে পাকা লাল টুকটুকে রং ধারণ করে। বেশ ভালোই ফলন পাওয়া যায়।
চাপাদহ গ্রামের সোহাগ মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় স্ট্রবেরি প্রথম চাষ করা হয়। ফলটি দেখতে লোভনীয় এবং খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু। লাভজনক একটি ফল। আমি স্ট্রবেরি চাষ করবো। তাই আসিফের কাছে পরামর্শ নিতে এসেছি।’
স্ট্রবেরি চাষি কলেজছাত্র আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘শখ থেকেই মূলত স্ট্রবেরি চাষের শুরু। এখন প্রায় ১৮০০ স্ট্রবেরি গাছ রয়েছে। পরিবারের চাহিদার পাশাপাশি অল্প দামে বাজারেও বিক্রি করতে পারছি। আগামীতে আরও বড় আকারে বাগান করার পরিকল্পনা আছে।’
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘জেলায় এখন উন্নতমানের ও বিদেশি ফল কৃষকেরা চাষ করছেন। তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে অনেক আগ্রহী। তেমনই একজন আসিফ মাহমুদ। তিনি ছাদে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন। সফল হয়েছেন এবং বাজারদরও ভালো পাচ্ছেন। যেসব শিক্ষার্থী ছাদ বাগানে আগ্রহী; তাদের কৃষি বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কৃষি বিষয়ক যাবতীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।’