বয়স ৯ বছর, সর্বকনিষ্ঠ হেডমাস্টার তিনি
৯ বছর বয়সেই বিশ্বের প্রধান শিক্ষক বনে যান বাবর, খ্যাতি তার সর্বকনিষ্ঠ হেড মাস্টার’ হিসেবে। ২০০২ সালের ঘটনা এটি। বাবর তখন কলকাতা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। সকালে নিজে পড়ে, আর বিকালে অন্যদের পড়ায়। নিজের বাড়ির একচিলতে উঠানই তার স্কুলবাড়ি। শিক্ষা যেন অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল না হয়, সে লক্ষ্যেই তার এই উদ্যোগ।
জানা যায়, ২০০২ সালের দিকে স্কুল যাওয়ার পথে সমবয়সীদের দেখে খারাপ লাগত দশ বছর বয়সী বাবরের। রোজ দেখত- কেউ সিগারেট টানছে, কেউবা এটা সেটা কুড়াচ্ছে। তাদের স্কুলে না যাওয়া নিয়ে কৌতূহল হতো তার। এর পর ভেবে বসল, এদের জন্য কিছু একটা করবে। তাই তো নিজের বাড়ির উঠানেই স্কুল খুলে বসল।
বাবর জানায়, ‘আমি যখন স্কুলে যেতাম, তখন ওরা আবর্জনার স্তূপ ঘেঁটে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস খোঁজার চেষ্টা করত। এসব দেখে খুব খারাপ লাগত। তাই একদিন ওদেরকে আমাদের বাড়িতে আসতে বলি। এর পর থেকে স্কুল থেকে আমি যা শিখে আসতাম, তা-ই ওদের শেখাতাম। একসময় আমাদের বাড়ির উঠানটাই স্কুল হয়ে ওঠে। ২০০২ সালে এটার নাম দেওয়া হয় আনন্দ শিক্ষা নিকেতন।’
স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর শুধু সেখানকার নয়, গোটা বিশ্বের কনিষ্ঠতম হেডমাস্টারে পরিণত হয় বাবর। ওই ছেলেমেয়েগুলো প্রতিদিন সকালে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে ফেলত। তার পর বিকালে ছুটে আসত বাবরের স্কুলে। ২০১৫ সালে উঠান থেকে একটা বাড়িতে স্থানান্তরিত হয় স্কুলটি। পরে এটি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি বেসরকারি স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি পায়। গত ১৬ বছরে প্রায় পাঁচ হাজার শিশুকে শিক্ষিত করেছেন বাবর। বেশ কয়েকজন আবার সেই স্কুলেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। বর্তমানে ২৫ বছরে পা দেওয়া বাবর বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ছেন।