‘নাইকি’ জুতো পোড়ানোর মহোৎসব যুক্তরাষ্ট্রে; কেন?
‘নাইকি’ জুতো পোড়ানোর হিড়িক পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শুধু জুতো বললে ভুল হবে, কোম্পানীটির বানানো মোজা পোড়ানোর মহোৎসবও চলছে দেশটিতে।
কিন্তু কেন এই বিক্ষোভ? গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি ‘আমেরিকান ফুটবল’খেলোয়াড় কলিন ক্যাপারনিককে নিয়ে নাইকি’র তৈরি একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যে আসতেই এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, ২০১৬ সালে ন্যাশনাল ফুটবল লিগে খেলার সময় জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন হাঁটু গেড়ে বসে পড়তেন ক্যাপারনিক। দেশজুড়ে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের ওপর পুলিশি গুলি চালানোর প্রতিবাদেই এই ভঙ্গি করতেন তিনি। যা ভাল চোখে নেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অনেকে। আর সেই ফুটবলারকে নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরির কারনেই নাইকি’র জুতো পোড়ানো হচ্ছে।
যদিও ক্যাপারনিককে নিয়ে বিতর্ক এর আগেও ছিল। কিছুদিন আগে একটি ম্যাচ শুরুর পূর্বে যখন স্টেডিয়ামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত বাজছিল, তখন উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতকে সম্মান দেখাননি ক্যাপারনিক কলিন। তার পরে কলিনকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়। সে সময় কলিন জানিয়েছিলেন, আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের কারণে সমাজের সমস্ত স্তরে নানা অসুবিধায় পড়তে হয় কৃষ্ণাঙ্গদের। সর্বত্র তাঁদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। এই বৈষম্যের প্রতিবাদেই এই আচরণ করেন তিনি।
এদিকে কলিন ও নাইকির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ লিখেছেন, ‘একজন খাঁটি আমেরিকান হিসেবে নাইকির পণ্য বর্জন করছি। সকলের এটাই করা উচিৎ।’ কেউ আবার আরও একধাপ এগিয়ে আমেরিকার মাটিতে নাইকি পণ্য বর্জন করার ডাক দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘টকওয়াটার’ জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘন্টায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৭ লক্ষ বার ‘নাইকি’ শব্দটি ব্যবহার হয়েছে। গত সপ্তাহের থেকে যা প্রায় ১৩৫ শতাংশ বেশি। টুইটারে একটি জুতো পোড়ানোর ছবি ২০০০০ বার শেয়ার করার ঘটনাও ঘটেছে। অর্থাৎ বিজ্ঞাপন ঘিরে টালমাটাল সোশ্যাল মিডিয়া।
যদিও সমাজের উদারপন্থী অংশের অনেকে এই প্রতিবাদী বিজ্ঞাপনের জন্য বাহবা দিচ্ছেন ক্রীড়াসরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থাটিকে। সম্ভবত নাইকির লক্ষ্যও ছিল তাই। নেতিবাচক প্রচারনার ডামাডোলে নিজেদের প্রচারনাকে আরেকটু ঝালিয়ে নেওয়া। কে জানে, সর্বশেষ কী হয়?