১৬ জুন ২০২৩, ১৪:২৭

রক্তদান আবুল খায়েরের আত্মতৃপ্তি, ১১ বছরে দিয়েছেন ২৯ বার

মো. আবুল খায়ের সবুজ  © ফাইল ছবি

মো. আবুল খায়ের সবুজ। ৩১ বছর বয়সী যুবক। বিগত ২০১২ সালে এক গর্ভবতী মাকে রক্তদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার রক্তদানের সূচনা। এরপর থেকে মানুষের রক্তের প্রয়োজনে যেকোনো সময় রক্তদানে ছুটে যাচ্ছেন ‘এ পজিটিভ’ গ্রুপের এই রক্তযোদ্ধা।

এখন পর্যন্ত ২৯ বার রক্তদান করেছেন তিনি। তার থেকে প্রাপ্ত রক্ত গ্রহীতাদের মধ্যে ছিলেন শিশু, গর্ভবতী নারী, মুমূর্ষু রোগী ও দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তি। আবুল খায়ের সবুজ ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ইলিশাকান্দি এলাকার আবুল কালামের ছেলে। নিজ জেলা ভোলা ছাড়াও বরিশাল এবং ঢাকায়ও রক্তদান করেছেন তিনি।

অন্যদিকে স্থানীয় তরুণ-যুবকদের রক্তদানে উৎসাহী করে তুলতে ২০২০ সালে তিনি গঠন করেন ‘তানহা হেলথ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওই সংগঠনের অন্তত ৬০ জন সদস্য বর্তমানে নিয়মিত রক্তদান করছেন। এছাড়া, সংগঠনটির মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন আবুল খায়ের সবুজ। তার নানান মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে তার কাছে এ নিয়ে জানতে চাইলে নিজের রক্তদানের কথা তুলে ধরে আবুল খায়ের সবুজ বলেন, নিজের আত্মতৃপ্তি থেকেই মুমূর্ষু রোগীদের প্রয়োজনে রক্তদান করে থাকি। এ পর্যন্ত ২৯ বার রক্ত দিয়েছি। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন অপরিচিত। তবুও রক্তদানে কখনো পিছিয়ে যাইনি। মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্যই এ কাজ করছি। কারণ এটি একটি মহৎ কাজ।

আমি মনে করি এক সময় দেশের প্রতিটি তরুণ-যুবক রক্তদানের বিষয়ে সচেতন হয়ে মুমূর্ষু রোগীদের রক্তের প্রয়োজনে এগিয়ে আসা উচিৎ। আমরা মানুষ, তাই মানুষের বিপদে আমাদেরকেই পাশে থাকতে হবে। আমি নিজেও একজন মানুষ হিসেবে নিঃস্বার্থভাবে অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা চালাচ্ছি—যুক্ত করেন সবুজ।

আমি স্বপ্ন দেখি, এ সমাজ হবে মানবিক ও বৈষম্য-মুক্ত। ধনী-গরিবের মধ্যে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ। সবাই মিলেমিশে একে অন্যের বিপদে এগিয়ে যাবো। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক মানবতা, জয় হবে মানবতার—স্বপ্ন এই যুবকের।

রক্তদানের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অতনু মজুমদারের বলেন, ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী, ৪৫ কেজির ওপরে সুস্থ যে কেউ রক্তদান করতে পারবেন। রক্তদানে কোনো সমস্যা নেই। কারণ ১২০ দিন পর শরীরে যে রক্ত কণিকা থাকে তা মারা যায়। তাই কারও প্রয়োজনে যদি কেউ রক্তদান করেন তাহলে এটি সত্যিই একটি মহৎ কাজ। কারণ এ রক্তদানের জন্য অনেকের প্রাণ বেঁচে যায়।