ম্যারাডোনার ‘হ্যান্ড অব গড’ জার্সিটি রেকর্ড ৭৭ কোটি টাকায় বিক্রি
আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতানোর পথে অলৌকিকতার জন্ম দিয়েছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ৫১ মিনিটে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন তিনি, যা ‘হ্যান্ড অব গড’নামে পরিচিত। অনেকের কাছে এটি বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসের সেরা মুহূর্ত, অনেকের কাছে আবার কলঙ্কের।
এর ৪ মিনিট পরেই ছয় ইংলিশ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ম্যারাডোনা করেন অবিস্মরণীয় গোল, যা বিংশ শতাব্দীর সেরা গোলের স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রয়াত ম্যারাডোনার সেই ম্যাচের জার্সি গত মাসে নিলামে তোলা হয়েছিল। সেটি আজ বিক্রি হয়ে গেল রেকর্ড ৯.২ মিলিয়ন ডলারে (৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ পাউন্ড)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭৭ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৭ টাকা।
ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে এর আগে এত দামে কোনো ম্যাচ জার্সি বিক্রি হয়নি। বিষয়টি আজ নিশ্চিত করেছে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ‘সোদিবাই’। তবে জার্সিটি কে বা কোন প্রতিষ্ঠান কিনেছে, সে ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।
‘সোদিবাই’-এর পথ পরিধান ও আধুনিক সংগ্রহশালা বিভাগের প্রধান ব্রাহাম ওয়াখটার বলেছেন, ‘ম্যারাডোনার হ্যান্ড অব গড গোলের জার্সিটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ক্রীড়া সামগ্রীর ছোট্ট তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তাঁর সেই গোলের মুহূর্তটি শুধু ক্রীড়া ইতিহাসের নয়, বিংশ শতাব্দীরও বাস্তব অনুস্মারক।’
যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি বেসবল খেলোয়াড় বেব রুথের জার্সির দাম এত দিন সবচেয়ে বেশি ছিল। ১৯২০ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত নিউইয়র্ক ইয়াঙ্কিসের হয়ে খেলেছেন রুথ। ২০১৯ সালে তাঁর জার্সির দাম উঠেছিল ৮.৮ মিলিয়ন ডলার।
বিস্ময়কর হলেও সত্যি, সেই ঐতিহাসিক জার্সি ম্যারাডোনা তাঁর পরিবার কিংবা আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে (এএফএ) দেননি। জার্সিটি ছিল ম্যানচেস্টারের জাতীয় ফুটবল জাদুঘরে। এত দিন এটির মালিক ছিলেন সাবেক ইংলিশ ফুটবলার স্টিভ হজ। ওই ম্যাচের পর ম্যারাডোনা যে হজের সঙ্গেই জার্সি বদল করেছিলেন!
যদিও ম্যারাডোনার মেয়ে দালমা কদিন আগে নিলামে ওঠা জার্সিকে ‘ভুয়া’ দাবি করেন। সেই ম্যাচে দুই অর্ধে নাকি আলাদা দুটি জার্সি পরেছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল নক্ষত্র, ‘বাবা আমাদের বলে গেছেন, এটা মোটেও সেই জার্সি নয়। আমরা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, আমি কেন আমার জীবনের সেরা জার্সিটা আরেকজনকে দিতে যাব? সাবেক ইংলিশ ফুটবলার (স্টিভ হজ) ভাবছেন, তিনি দ্বিতীয়ার্ধের জার্সিটা পেয়েছেন। আসলে ভুল। তিনি প্রথমার্ধের জার্সিটা পেয়েছেন।’
সে যাই হোক, রেকর্ড দামে বিক্রি হওয়া জার্সিটা যে সেই ম্যাচেরই—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।